এশিয়ার সবচেয়ে উঁচু ও বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উঁচু গাছের সন্ধান মিলেছে তিব্বতে। গাছটির উচ্চতা প্রায় ৩৩৫ ফুট।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মে মাসে তিব্বতের নাইংচি শহরের বম কাউন্টির বনাঞ্চলে গাছটিকে খুঁজে পান চাইনিজ একাডেমী সাইন্সেসের গবেষকেরা। ব্যাসের দিক থেকে গাছটি ৯.২ ফুট।
যদিও নতুন খোঁজ পাওয়া গাছটি ঠিক কোন প্রজাতির সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমগুলোর মতে, গাছটি হিমালয়ান সাইপ্রেস কিংবা তিব্বত সাইপ্রেস প্রজাতির হতে পারে।
গত কয়েক বছর ধরেই এশিয়ায় উচ্চতম গাছের সন্ধানে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এরমধ্যেই তারা উঁচু এমন একাধিক গাছ খুঁজে পান।
২০২২ সালের এপ্রিলে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা তিব্বতের মেডগ কাউট্রি অঞ্চলে একটি গাছের সন্ধান পায়। প্রায় ২৫২ ফুট উচ্চতার এ গাছটিকে তখন চীনের সবচেয়ে উঁচু গাছ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল।
কিন্তু ২৫২ ফুটের এ রেকর্ডটি খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। বরং চলতি বছরেই তিব্বতের জায়ু কাউনট্রিতে ২৭৪ ফুট উচ্চতার আরও একটি গাছের খোঁজ পাওয়া যায়।
এর আগে এশিয়ার সবচেয়ে উঁচু গাছের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল মালয়েশিয়ার সাবাহ এলাকার সংরক্ষিত ডানাম ভ্যালিতে। ইয়োলো মিরানটি প্রজাতির ঐ গাছটির উচ্চতা প্রায় ৩৩১ ফুট।
তবে ৩৩৫ ফুট উচ্চতার গাছটির খোঁজ পাওয়ার পর রেকর্ড আর চীনের গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ থাকেনি। বরং এটি এশিয়ার সবচেয়ে উঁচু গাছ হিসেবে রেকর্ড তৈরি করেছে।
নানা সময়ে চীনে পাওয়া উঁচু এ গাছগুলোর মধ্যে একটি মিল রয়েছে। সবগুলো গাছই তিব্বতের নাইংচি অঞ্চলে অবস্থিত। এ অঞ্চলটি বাস্তুতান্ত্রিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সংরক্ষণের আওতায়ও আনা হয়েছে।
এশিয়ার সবচেয়ে উঁচু গাছটি ছাড়াও তিব্বতের এ অঞ্চলে ২৭৯ ফুটের চেয়ে বেশি উচ্চতার আরও বহু গাছের সন্ধান পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে ২৯৫ ফুটের চেয়ে বেশি উচ্চতার প্রায় ২৫টি গাছের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে এমন উঁচু গাছ তৈরি হওয়ার মতো উপযুক্ত স্থান খুব বেশি নেই। গাছগুলোর দৈত্যাকার ধারণ করতে উপযুক্ত মাটি ও জলবায়ুগত পরিস্থিতির প্রয়োজন হয়। এছাড়াও গাছগুলোকে বাতাস, আগুন, বজ্রপাত ও মানুষের প্রতিবন্ধকতা থেকে দূরে রাখতে হয়।
২৩৫ ফুট উচ্চতার সবচেয়ে উঁচু গাছটিকে খুঁজে বের করতে বিজ্ঞানীরা ড্রোন, রাডার ও লেজারের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছে। এর মাধ্যমে অঞ্চলটিতে থাকা গাছগুলোকে ম্যাপিং করা হয়েছে এবং সম্ভাব্য উচ্চতা নির্ণয় করা হয়েছে।
লাইভ সাইন্সের তথ্য অনুযায়ী, বিজ্ঞানীরা সাইপ্রেস গাছটির মাত্রা পরিমাপের জন্য একটি ত্রিমাত্রিক মডেলও তৈরি করেছেন।
অঞ্চলটিতে কাজ করে যাওয়া বিজ্ঞানীরা আরও বিস্তর গবেষণার জন্য অন্য বিজ্ঞানীদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এতে করে উক্ত অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের উপর আরো গভীরভাবে গবেষণা করা সম্ভব হবে।