যশোর শহরের জেলরোডে অবস্থিত পদ্মা নার্সিং হোমে ত্রুটিপূর্ণ অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা রাজিয়া বেগম (৭০) নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তিনি শার্শা উপেজলার বেনাপোল কলেজপাড়া এলাকার ফকির আহম্মেদের স্ত্রী। তবে পদ্মা নার্সিং হোমের ম্যানেজার দাবি করেছেন, অস্ত্রোপচারে ত্রুটি ছিলো না। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
মৃত রাজিয়া বেগমের ছেলে জুলফিকার আলী জানান , রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার মা রাজিয়া বেগমকে পদ্মা নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। ভর্তির রেজি নং-৩৯৫২।
তখন গাইনী বিভাগের ডা. রবিউল ইসলাম রোগীকে দেখে টোটাল অ্যাবডমিনাল হিস্টেরিক্টমি হয়েছে বলে দ্রুত অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন । পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা হয়।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে জ্ঞান ফেরার পর তার মা রাজিয়া যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকেন। এ সময় মায়ের পাশে থাকা বোন ও দুলাভাই সেবিকাদের ডাকেন। কিন্তু কেউ রোগীকে দেখভালের জন্য আসেননি। যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে সোমবার ভোরে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসক এসে তার মাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। স্বজনরা তার মাকে জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক রোগীকে ভর্তি করে গাইনী ওয়ার্ডে পাঠান। জুলফিকার আরও জানান, সেখানে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে চিকিৎসক তার মা রাজিয়াকে জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে পাঠান। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে তাকে আইসিইউতে নেয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জুলফিকার আলীর অভিযোগ ত্রুটিপূর্ণ অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা অবহেলার কারণে তার মা রাজিয়ার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে পদ্মা নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
এ বিষয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. পার্থ প্রতিম চক্রবর্ত্তী জানান, রাজিয়া নামে এক রোগীকে খারাপ অবস্থায় সকালে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা। পরে আইসিইউতে নিলে তার মৃত্যু হয়।
পদ্মা নার্সিং হোমের ম্যানেজার রুহুল কুদ্দুস জানান, রাজিয়া বেগমের অস্ত্রোপচারে কোন ত্রুটি ছিলোনা। চিকিৎসায় অবহেলা করা হয়নি। অস্ত্রোপচারের ৮ ঘন্টা পর হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, পদ্মা নার্সিং হোমে ত্রুটিপূর্ণ অস্ত্রোপচারে রাজিয়া বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।