চুড়ামনকাটি-সাতমাইলে টঙ দোকানে চোরাই তেলের ব্যবসা!

,
চুড়ামনকাটি-সাতমাইলে টঙ দোকানে চোরাই তেলের ব্যবসা!

যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের বারীনগর সাতমাইল এলাকায় মহাসড়কের পাশে একাধিক চোরাই তেলের দোকান বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন অসংখ্য গাড়ি থেকে অসাধু চালকেরা এসব টঙ দোকানে কম দামে তেল বিক্রি করে। এলাকার এক জনপ্রতিনিধি এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তবে স্থানীয় ক্যাম্পের পুলিশ বলছে চোরাই তেল বিক্রির বিষয়টি জানা নেই।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যশোর ঝিনাইদহ মহাসড়কের চুড়ামনকাটি ও বারীনগর সাতমাইলের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে চোরাই তেলের টঙ দোকান। এলাকার প্রভাবশালীরা অবৈধ এই ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা সড়কের পাশের সরকারি জমি দখল করে টিনের তৈরি এসব খুপড়ি দোকান ঘর গড়ে তুলেছে। ঘরের সামনে কিছু তেলের ড্রাম ও পাইপ ঝুলানো রয়েছে। এসব দোকানে ট্যাংকলরিসহ বিভিন্ন গাড়ির চালকরা কম দামে সেখানে তেল বিক্রি করে।

সূত্র জানায়,মালিককে না জানিয়ে চুরি করে চালকরা প্রতি লিটার তেল বিক্রি করে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। এতে করে চোরচক্র ও চালকরা লাভবান হলেও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গাড়ির মালিকরা।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, চুড়ামনকাটি ও বারীনগর সাতমাইলের বিভিন্ন স্থানে ৮ টি চোরাই তেলের দোকান রয়েছে। এরমধ্যে চুড়ামনকাটি উত্তরপাড়ার ঈদগাহ সংলগ্ন ফাঁকা জায়গার একটি দোকান, সাতমাইল বাজারে প্রবেশ মুখের একটি দোকান ও মানিকদিহি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশেপাশের ৩টি দোকান। এলাকাবাসী আরও জানান, চুড়ামনকাটি উত্তরপাড়ার ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকার চোরাই তেলের দোকানের মালিক হলেন চুড়ামনকাটি গ্রামের আল আমিন। মানিকদিহি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশেপাশের দোকানগুলো ৫ ভাই মিলে নিয়ন্ত্রন করছেন। তারা হলেন শাহবাজপুর গ্রামের আলতাফ, আনিসুর, আলী হোছেন, আখতার ও আনতার। এছাড়া সাতমাইল বাজারের প্রবেশ মুখে চোরাই তেলের দোকানের মালিক হলেন উত্তর ললিতাদহ (বেলেডাঙ্গা) গ্রামের রেজাউল ইসলাম ওরফে রেজা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রত্যেক দোকানে মাসিক বেতন দিয়ে ২/৩ জন করে কর্মচারী রাখা হয়েছে। তাদের কাজ হলো ট্যাংকলরি ও বিভিন্ন গাড়ির ট্যাংক থেকে তেল নামানো। রাত-দিন সব সময় চোরাই তেলের এসব দোকান খোলা থাকে। কর্মচারিরা তেল নামানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। আর মালিকরা খুব সতর্কতার সাথে দোকান পরিচালনা করেন। এভাবে প্রকাশ্যে চোরাই তেলের রমরমা ব্যবসা চললেও অসাধুরা অজ্ঞাত কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চোরাই তেলের প্রতি দোকানের সামনে রাখা আছে ড্রাম ও পাইপ। যা দেখেই চালকরা বুঝে নেন সেখানে তেল ক্রয় করা হয়। বিভিন্ন গাড়ির চালকরা এসব দোকানের সামনে গাড়ি থামানোর সাথেই কর্মচারীরা পাইপের সাহায্যে টাংকি থেকে তেল নামাচ্ছে। তেল বিক্রি করেই টাকা নিয়ে চালকরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। দোকানদারও চোরাই তেল বেশি সময় দোকানে রাখে না। মুুহূর্তের মধ্যে তেল বিক্রির জন্য পাঠিয়ে দেয়। সাতমাইল এলাকার চোরাই তেল দোকানের ২ জন কর্মচারীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তারা রাজি হননি। দোকান মালিকের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। কিন্তু মালিককে দোকানে পাওয়া যায়নি।

অন্য এক দোকানের কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চোরাই তেলের ব্যবসা করতে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করতে হয়েছে। ফলে অনেকে দেখেও না দেখার ভান করেন। এই বিষয়ে হৈবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক জানান, ওই সব তেলের দোকানের সামনে বিভিন্ন গাড়ি এসে থামে। পরে দোকানের কর্মচারীরা ট্যাংক থেকে তেল নামনোর কাজে ব্যস্ত থাকে। আসলে দোকানগুলো চোরাই তেলের দোকান কিনা তিনি নিশ্চিত নন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইউপি সদস্য জানান, মহাসড়কের পাশের ফাঁকা জায়গায় তৈরি করা খুপড়ি দোকানগুলোতে চোরাই তেলের রমরমা ব্যবসা করা হচ্ছে। এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাদের চোরাই তেলের ব্যবসায় শেল্টার দেন। তেলের ব্যবসা করে চোর চক্রের সদস্যরা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছে।

এই বিষয়ে সাজিয়ালী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই সেলিম জানান, চুড়ামনকাটি ও বারীনগর সাতমাইল এলাকায় চোরাই তেলের ব্যবসা সম্পর্কে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে অসাধুদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

চুড়ামনকাটি-সাতমাইলে টঙ দোকানে চোরাই তেলের ব্যবসা!

চুড়ামনকাটি-সাতমাইলে টঙ দোকানে চোরাই তেলের ব্যবসা!

যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের বারীনগর সাতমাইল এলাকায় মহাসড়কের পাশে একাধিক চোরাই তেলের দোকান বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন অসংখ্য গাড়ি থেকে অসাধু চালকেরা এসব টঙ দোকানে কম দামে তেল বিক্রি করে। এলাকার এক জনপ্রতিনিধি এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তবে স্থানীয় ক্যাম্পের পুলিশ বলছে চোরাই তেল বিক্রির বিষয়টি জানা নেই।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যশোর ঝিনাইদহ মহাসড়কের চুড়ামনকাটি ও বারীনগর সাতমাইলের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে চোরাই তেলের টঙ দোকান। এলাকার প্রভাবশালীরা অবৈধ এই ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা সড়কের পাশের সরকারি জমি দখল করে টিনের তৈরি এসব খুপড়ি দোকান ঘর গড়ে তুলেছে। ঘরের সামনে কিছু তেলের ড্রাম ও পাইপ ঝুলানো রয়েছে। এসব দোকানে ট্যাংকলরিসহ বিভিন্ন গাড়ির চালকরা কম দামে সেখানে তেল বিক্রি করে।

সূত্র জানায়,মালিককে না জানিয়ে চুরি করে চালকরা প্রতি লিটার তেল বিক্রি করে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। এতে করে চোরচক্র ও চালকরা লাভবান হলেও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গাড়ির মালিকরা।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, চুড়ামনকাটি ও বারীনগর সাতমাইলের বিভিন্ন স্থানে ৮ টি চোরাই তেলের দোকান রয়েছে। এরমধ্যে চুড়ামনকাটি উত্তরপাড়ার ঈদগাহ সংলগ্ন ফাঁকা জায়গার একটি দোকান, সাতমাইল বাজারে প্রবেশ মুখের একটি দোকান ও মানিকদিহি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশেপাশের ৩টি দোকান। এলাকাবাসী আরও জানান, চুড়ামনকাটি উত্তরপাড়ার ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকার চোরাই তেলের দোকানের মালিক হলেন চুড়ামনকাটি গ্রামের আল আমিন। মানিকদিহি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশেপাশের দোকানগুলো ৫ ভাই মিলে নিয়ন্ত্রন করছেন। তারা হলেন শাহবাজপুর গ্রামের আলতাফ, আনিসুর, আলী হোছেন, আখতার ও আনতার। এছাড়া সাতমাইল বাজারের প্রবেশ মুখে চোরাই তেলের দোকানের মালিক হলেন উত্তর ললিতাদহ (বেলেডাঙ্গা) গ্রামের রেজাউল ইসলাম ওরফে রেজা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রত্যেক দোকানে মাসিক বেতন দিয়ে ২/৩ জন করে কর্মচারী রাখা হয়েছে। তাদের কাজ হলো ট্যাংকলরি ও বিভিন্ন গাড়ির ট্যাংক থেকে তেল নামানো। রাত-দিন সব সময় চোরাই তেলের এসব দোকান খোলা থাকে। কর্মচারিরা তেল নামানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। আর মালিকরা খুব সতর্কতার সাথে দোকান পরিচালনা করেন। এভাবে প্রকাশ্যে চোরাই তেলের রমরমা ব্যবসা চললেও অসাধুরা অজ্ঞাত কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চোরাই তেলের প্রতি দোকানের সামনে রাখা আছে ড্রাম ও পাইপ। যা দেখেই চালকরা বুঝে নেন সেখানে তেল ক্রয় করা হয়। বিভিন্ন গাড়ির চালকরা এসব দোকানের সামনে গাড়ি থামানোর সাথেই কর্মচারীরা পাইপের সাহায্যে টাংকি থেকে তেল নামাচ্ছে। তেল বিক্রি করেই টাকা নিয়ে চালকরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। দোকানদারও চোরাই তেল বেশি সময় দোকানে রাখে না। মুুহূর্তের মধ্যে তেল বিক্রির জন্য পাঠিয়ে দেয়। সাতমাইল এলাকার চোরাই তেল দোকানের ২ জন কর্মচারীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তারা রাজি হননি। দোকান মালিকের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। কিন্তু মালিককে দোকানে পাওয়া যায়নি।

অন্য এক দোকানের কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চোরাই তেলের ব্যবসা করতে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করতে হয়েছে। ফলে অনেকে দেখেও না দেখার ভান করেন। এই বিষয়ে হৈবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক জানান, ওই সব তেলের দোকানের সামনে বিভিন্ন গাড়ি এসে থামে। পরে দোকানের কর্মচারীরা ট্যাংক থেকে তেল নামনোর কাজে ব্যস্ত থাকে। আসলে দোকানগুলো চোরাই তেলের দোকান কিনা তিনি নিশ্চিত নন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইউপি সদস্য জানান, মহাসড়কের পাশের ফাঁকা জায়গায় তৈরি করা খুপড়ি দোকানগুলোতে চোরাই তেলের রমরমা ব্যবসা করা হচ্ছে। এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাদের চোরাই তেলের ব্যবসায় শেল্টার দেন। তেলের ব্যবসা করে চোর চক্রের সদস্যরা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছে।

এই বিষয়ে সাজিয়ালী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই সেলিম জানান, চুড়ামনকাটি ও বারীনগর সাতমাইল এলাকায় চোরাই তেলের ব্যবসা সম্পর্কে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে অসাধুদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত