আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় সমস্যা তারা নিজেদের দেশের মালিক মনে করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, “আমার সব সময় মনে হয়, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা- তারা নিজেদের এই দেশের মালিক মনে করে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। এই বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে বড় রকমের ঝাঁকুনি দরকার। বড় রকমের যুদ্ধ-সংগ্রাম দরকার। এই সংগ্রাম-যুদ্ধে আমরা আছি।”
বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) গণঅধিকার পরিষদের (নূর) “সাংবিধানিক মৌলিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান আওয়ামী লীগের নিজের স্বার্থে তৈরি করা মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “এটা দলের জন্য। এই সংবিধানকে কেটে এক তৃতীয়াংশ করেছে তারা একজন ব্যক্তির জন্য এবং যেখানে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। এটা নাকি কোনো দিনই পরিবর্তন করা যাবে না। সংবিধান তো মানুষের জন্য! সেই মানুষের সংবিধান তারা নষ্ট করে ফেলেছে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজকে পত্রিকায় লিখেছে, আমার মতো জঘন্য মিথ্যাবাদী নাকি আর নাই। আমি নাম বলতে চাই না। আমরা তো রাজনৈতিক রুচিশীলতার মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। তারা যে ভাষায় কথা বলে আমরা তো সেই ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত নই। ওনারা (আওয়ামী লীগ নেতা) নাম ধরে গালিগালাজ করেন। তা কোনোভাবেই রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না।”
তরুণদের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি খুব কষ্ট পাই যখন দেখি যে, জঘন্যতম একটা ঘটনা ঘটেছে… একজন নারী বা একজন ছাত্রী নির্যাতিত হয়েছে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরুণরা-ছাত্ররা এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে না। অথবা সমাজে, রাষ্ট্রে মানুষের আজকে সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে নেওয়া হচ্ছে, মানবাধিকার হরণ করে নেওয়া হচ্ছে… আমরা তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেইভাবে কোনো প্রতিবাদ দেখতে পারছি না, রাস্তায় নামছে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমি দশম শ্রেণির একজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম- তোমাদের ক্লাসের বন্ধুরা কি হতে চায়? সে বলছে পলিটিক্স করতে চায়। আমি অবাক হয়েছি, বিস্মিত হয়েছি। কারণ সে যে স্কুলে পড়ে সেখানে সমস্ত বড়লোকদের ছেলেরা পড়ে। কেন পলিটিক্স করতে চায় জানতে চাইলাম, সে বলল, পলিটিশিয়ানদের অনেক টাকা।”
ফখরুল বলেন, “এটা হাসির কথা নয়…আজকে যে সমাজ তৈরি হয়েছে, আজকে যে রাষ্ট্রব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, আজকে যে তার চোখের সামনে সে দেখল পলিটিশিয়ানদের অনেক টাকা… অর্থাৎ যারা সরকারি দল করছে তারা এতো বেশি বিত্তশালী হয়ে উঠেছে যেটা দেখে মনে হয় যে ওটাই দরকার।”
গণঅধিকার পরিষদের (নূর) সভাপতি নুরুল হক নূরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।