যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আলোর মুখ দেখে না তদন্ত প্রতিবেদন

,
যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আলোর মুখ দেখে না তদন্ত প্রতিবেদন

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়মে গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, বিগত দিনে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন হলেও কোন ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এমন নজির নেই। তবে বর্তমান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন থেকে হাসপাতালে সকলকে নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে।

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর পিত্তথলির পাথর অস্ত্রোপচারের পর মনোয়ারা বেগম (৫৫) নামে এক রোগীকে আটকে রেখে স্বজনদের কাছ থেকে টাকা আদায় ও চিকিৎসকরে স্বাক্ষর বিহীন শর্ট স্লিপের মাধ্যমে ওষুধ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় তখনকার তত্ত্বাবধায়কের কাছে অভিযোগ করার পর তত্ত্বাবধায়কের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন হয়।

১০ নভেম্বর উপশহরের ইন্তাজ আলীর ছেলে আলমগীর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসক ও সেবিকার অবহেলায় ১২ নভেম্বর রাতে মারা যান তিনি। এই ঘটনায় তার স্বজনেরা লিখিত অভিযোগ করলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়।

২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে যশোর শহরের খোলাডাঙ্গার ফারুক হোসেনের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সালমা খাতুনকে (২৮) অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তির পর সন্তান প্রসব করেন। রোগীর অবস্থা খারাপ হলেও সেখানে কোন চিকিৎসক ছিলেন না। ওই সময় দায়িত্বরত আয়া হেলেনা প্রসব হওয়া শিশুকে মুত ভেবে কাপড়ে পেচিয়ে ওই বেডের নিচে রেখে দেন । পরে রাত সাড়ে সাতটার দিকে শিশুর কান্নার শব্দ পান স্বজনরো। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হয়।

৩১ আগস্ট অন্তসত্ত্বা রোক্সানা খাতুনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে সেবিকা ও ইন্টার্ণ বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসককে খবর দিলেও তিনি রোগী দেখতে আসননি। অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়েও শেষ পর্যন্ত কোন চিকিৎসক না আসায় তার অপারেশন হয়নি। বাধ্য হয়ে রাতেই রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় বেসরকারি একটি হসপিটালে।

এই ঘটনায় হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়কের নির্দেশে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঝিকরগাছা উপজেলার হাজের আলী গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলাম ২৭ আগস্ট যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। তিনি ডান পায়ের পাতায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ভর্তির পরের দিন ওয়ার্ড রাউন্ডে আসেন ডা. আনম বজলুর রশিদ টুলু রোগীকে ক্লিনিকে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এই ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

৯ সেপ্টেম্বর রাতে যশোর সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মাসুদ হোসেনের স্ত্রী তাসমিনা বেগমকে (২০) হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। যার রেজিষ্টেশন নাম্বর ৪১৩০৭/২। এসময় দায়িত্বরত সেবিকারা ইন্টার্নী চিকিৎসককে ডাকেন। তারা রোগী দেখে অনকল চিকিৎসক ডা. রিনা ঘোষ ও ডা. রাজিয়া আক্তারকে খবর দেন। কিন্তু দুই চিকিৎসকের একজনও রোগী দেখতে আসেননি বলে স্বজনদের অভিযোগ।

এই ঘটনায় রোগীর স্বামী মাসুদ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলার কারণে স্ত্রীর চিকিৎসা না পাওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১৬ আগস্ট ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মৃত আজিজুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান ভর্তি হয়ে মডেল ওয়ার্ডে ৩২ নম্বর বিছানায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১৬ আগস্ট রোগী মিজানুর রহমানের সাথে দুব্যবহার করেন চিকিৎসক। এই ঘটনায়ও তদন্ত কমিটি গঠন হয়।

১০ এপ্রিল চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের আড়শিংড়ী গ্রামের বাসিন্দা আবু তাহের (৭৫) জমিজমা নিয়ে জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন । ১২ এপ্রিল হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। জখমি সনদপত্রটি গ্রিভিয়াস করার নামে রোগির স্বজনদের সাথে ২৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে ২৩ এপ্রিল ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

সূত্র জানায়, প্রতিটি ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অজ্ঞাত কারণে প্রতিটি তদন্ত প্রতিবেদন ফাইলবন্দি হয়ে আছে। সূত্র জানায়, একের পর অনিয়মের ঘটনায় জড়িতরা পার পেয়ে যাওয়ার কারণে তারা কোন কিছু কর্ণপাত করেন না। তাদের দেখে অন্যরাও চিকিৎসাসেবায় অনিয়ম দুর্নীতির সাহস দেখাচ্ছেন।

এই বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. পার্থ প্রতীম চক্রবর্ত্তী জানান, বিগত দিনে তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে কিছু জানা নেই। তবে বর্তমানে সরকারি এই হাসপাতালে সকলকে নিয়ম মেনে চলতেক হবে। অন্যথায় বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আলোর মুখ দেখে না তদন্ত প্রতিবেদন

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আলোর মুখ দেখে না তদন্ত প্রতিবেদন

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়মে গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, বিগত দিনে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন হলেও কোন ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এমন নজির নেই। তবে বর্তমান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন থেকে হাসপাতালে সকলকে নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে।

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর পিত্তথলির পাথর অস্ত্রোপচারের পর মনোয়ারা বেগম (৫৫) নামে এক রোগীকে আটকে রেখে স্বজনদের কাছ থেকে টাকা আদায় ও চিকিৎসকরে স্বাক্ষর বিহীন শর্ট স্লিপের মাধ্যমে ওষুধ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় তখনকার তত্ত্বাবধায়কের কাছে অভিযোগ করার পর তত্ত্বাবধায়কের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন হয়।

১০ নভেম্বর উপশহরের ইন্তাজ আলীর ছেলে আলমগীর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসক ও সেবিকার অবহেলায় ১২ নভেম্বর রাতে মারা যান তিনি। এই ঘটনায় তার স্বজনেরা লিখিত অভিযোগ করলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়।

২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে যশোর শহরের খোলাডাঙ্গার ফারুক হোসেনের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সালমা খাতুনকে (২৮) অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তির পর সন্তান প্রসব করেন। রোগীর অবস্থা খারাপ হলেও সেখানে কোন চিকিৎসক ছিলেন না। ওই সময় দায়িত্বরত আয়া হেলেনা প্রসব হওয়া শিশুকে মুত ভেবে কাপড়ে পেচিয়ে ওই বেডের নিচে রেখে দেন । পরে রাত সাড়ে সাতটার দিকে শিশুর কান্নার শব্দ পান স্বজনরো। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হয়।

৩১ আগস্ট অন্তসত্ত্বা রোক্সানা খাতুনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে সেবিকা ও ইন্টার্ণ বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসককে খবর দিলেও তিনি রোগী দেখতে আসননি। অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়েও শেষ পর্যন্ত কোন চিকিৎসক না আসায় তার অপারেশন হয়নি। বাধ্য হয়ে রাতেই রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় বেসরকারি একটি হসপিটালে।

এই ঘটনায় হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়কের নির্দেশে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঝিকরগাছা উপজেলার হাজের আলী গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলাম ২৭ আগস্ট যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। তিনি ডান পায়ের পাতায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ভর্তির পরের দিন ওয়ার্ড রাউন্ডে আসেন ডা. আনম বজলুর রশিদ টুলু রোগীকে ক্লিনিকে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এই ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

৯ সেপ্টেম্বর রাতে যশোর সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মাসুদ হোসেনের স্ত্রী তাসমিনা বেগমকে (২০) হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। যার রেজিষ্টেশন নাম্বর ৪১৩০৭/২। এসময় দায়িত্বরত সেবিকারা ইন্টার্নী চিকিৎসককে ডাকেন। তারা রোগী দেখে অনকল চিকিৎসক ডা. রিনা ঘোষ ও ডা. রাজিয়া আক্তারকে খবর দেন। কিন্তু দুই চিকিৎসকের একজনও রোগী দেখতে আসেননি বলে স্বজনদের অভিযোগ।

এই ঘটনায় রোগীর স্বামী মাসুদ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলার কারণে স্ত্রীর চিকিৎসা না পাওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১৬ আগস্ট ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মৃত আজিজুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান ভর্তি হয়ে মডেল ওয়ার্ডে ৩২ নম্বর বিছানায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১৬ আগস্ট রোগী মিজানুর রহমানের সাথে দুব্যবহার করেন চিকিৎসক। এই ঘটনায়ও তদন্ত কমিটি গঠন হয়।

১০ এপ্রিল চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের আড়শিংড়ী গ্রামের বাসিন্দা আবু তাহের (৭৫) জমিজমা নিয়ে জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন । ১২ এপ্রিল হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। জখমি সনদপত্রটি গ্রিভিয়াস করার নামে রোগির স্বজনদের সাথে ২৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে ২৩ এপ্রিল ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

সূত্র জানায়, প্রতিটি ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অজ্ঞাত কারণে প্রতিটি তদন্ত প্রতিবেদন ফাইলবন্দি হয়ে আছে। সূত্র জানায়, একের পর অনিয়মের ঘটনায় জড়িতরা পার পেয়ে যাওয়ার কারণে তারা কোন কিছু কর্ণপাত করেন না। তাদের দেখে অন্যরাও চিকিৎসাসেবায় অনিয়ম দুর্নীতির সাহস দেখাচ্ছেন।

এই বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. পার্থ প্রতীম চক্রবর্ত্তী জানান, বিগত দিনে তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে কিছু জানা নেই। তবে বর্তমানে সরকারি এই হাসপাতালে সকলকে নিয়ম মেনে চলতেক হবে। অন্যথায় বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হবে।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত