দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। এতে শীতের তীব্রতা কিছুটা কমেছে। তবে ঢাকার তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি কমে গেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, মৌলভীবাজার, যশোর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি আরও এলাকায় ছড়াতে পারে। রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমে যাবে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ঢাকায় আজ ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা গতকাল ছিল ১৫ ডিগ্রি।
তেঁতুলিয়া ছাড়াও ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দেশের ১৫টি এলাকায়। এরমধ্যে নওগাঁর বদলগাছী ও রাজশাহীতে ৭.৫; দিনাজপুরে ৮.২; চুয়াডাঙ্গায় ৮.৩; কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও পাবনার ঈশ্বরদীতে ৮.৫; কিশোরগঞ্জের নিকলিতে ৯; রংপুর এবং নীলফামারীর ডিমলা ও সৈয়দপুরে ৯.২; যশোর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও বগুড়ায় ৯.৪, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৯.৮ এবং গোপালগঞ্জে ৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
দেশের বড় এলাকাজুড়ে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে সেটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করলে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়।
শনিবার রাতে কমলেও রবিবার দেশের তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, “রবিবার দিনের তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এরপর আস্তে আস্তে রাতের তাপমাত্রাও বাড়তে থাকবে৷”
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী-অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঘন কুয়াশার কারণে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন চলাচল ব্যাহত হতে পারে। কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, মৌলভীবাজার, যশোর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
এ বছরের জানুয়ারি মাসের শুরু থেকেই শীত-কুয়াশার দাপট বাড়ে উত্তরাঞ্চলে। মাঝে কয়েকদিনের জন্য পরিস্থিতির উন্নতি হয়। পৌষ মাসের শেষে এসে ফের শীতের দাপট বাড়ে। জানুয়ারি মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসেও দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনার কথা বলা হয়।
টানা কয়েকদিন শীত ও কুয়াশার দাপটে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জীবনযাত্রাও ব্যাহত হচ্ছে। হাড় কাঁপানো শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ।