ভারতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১০ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
ভারতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১০ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের বস্তারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১০ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) স্থানীয় পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করে। মাওবাদী-প্রধান বস্তার অঞ্চলের আবুজহমাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভারতে জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে এই মাসে দ্বিতীয় বড় সংঘর্ষের ঘটনা এটি। গত ১৬ এপ্রিল নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ২৯ জন বিদ্রোহী যোদ্ধা নিহত হয়।

চীনের প্রয়াত নেতা মাও সেতুং এর রাজনৈতিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে গত কয়েক দশক ধরেই ভারতের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র গেরিলা সংগ্রাম পরিচালনা করছে একাধিক গোষ্ঠী। তারা ‘‘মাওবাদী’’ ও ‘‘নকশাল’’ বলে পরিচিত। তাদের দমনে ভারত সরকার ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রায়ই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত ঘটে। এতে বহু হতাহত হয়।

মাওবাদীরা দরিদ্র ভারতীয় কৃষক ও ভূমিহীন শ্রমিকদের জমির ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ দেওয়া ও খনিজ সম্পদে নিম্নশ্রেণির মানুষের হিস্যা রাখার দাবি জানিয়ে আসছে। সেজন্য সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে চায় তারা।

ছত্তিশগড় রাজ্যের পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবারের স্থানীয় সময় সকালের দিকে সংঘর্ষের পর তারা অন্তত ১০ জনের মরদেহ ও বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করেছে।

১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সাত ধাপের সংসদীয় নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে ভারতীয়রা। ৪ জুন ভোট গণনা হওয়ার কথা।

নকশাল শব্দটা এসেছে পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়ির ছোট্ট গ্রামের সূত্র ধরে যেখানে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা চারু মজুমদার ও কানু সান্যাল ১৯৬৭ সালে সরকার ও সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করেছিলেন।

২০০৬ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মাওবাদী সহিংসতাকে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি বলে বর্ণনা করার পর শুরু হয় ‘‘অপারেশন গ্রিন হান্ট’’।

২০০৯ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম সংসদে জানান, দেশে মাওবাদী প্রভাবিত জেলার সংখ্যা ২২৩। তবে তাদের প্রভাব মূলত দেশের দশটি রাজ্যের প্রায় ৭৫টি জেলায় বলে মনে করা হয়।

ভারতের ইউপিএ সরকারের আমলে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভিযান শুরু হয় যা এনডিএ সরকারের আমলেও গত দশ বছর যাবত অব্যাহত রয়েছে।

বস্তারের আইজিপি সুন্দররাজ বলেছেন, “গত সাড়ে তিন মাসে বস্তার ডিভিশনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৭৯ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে। বিপুল পরিমাণ অর্থও উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হচ্ছে মাওবাদীদেরও। এর ফলে তাদের ইকোসিস্টেমের ওপর প্রভাব পড়েছে।”

ছত্তিশগড় রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর মাওবাদীদের বিরুদ্ধে প্রচার জোরদার হলেও ১৬ এপ্রিলের সংঘর্ষের পর রাজ্য সরকার মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেয়।

রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘হিংসা দিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান করা যায় না। তাই সরকার মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।”

তার কথায়, ‘‘বন্দুকের নলের মুখে উন্নয়নও হতে পারে না, তাই আলোচনার পথ অবলম্বন করাই ভাল।”

গত তিন দশক ধরে যদিও বস্তার অঞ্চলে মাওবাদী এবং পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে সংঘর্ষই চলছে, আলোচনা হয়নি।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ভারতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১০ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত

ভারতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১০ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের বস্তারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১০ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) স্থানীয় পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করে। মাওবাদী-প্রধান বস্তার অঞ্চলের আবুজহমাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভারতে জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে এই মাসে দ্বিতীয় বড় সংঘর্ষের ঘটনা এটি। গত ১৬ এপ্রিল নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ২৯ জন বিদ্রোহী যোদ্ধা নিহত হয়।

চীনের প্রয়াত নেতা মাও সেতুং এর রাজনৈতিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে গত কয়েক দশক ধরেই ভারতের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র গেরিলা সংগ্রাম পরিচালনা করছে একাধিক গোষ্ঠী। তারা ‘‘মাওবাদী’’ ও ‘‘নকশাল’’ বলে পরিচিত। তাদের দমনে ভারত সরকার ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রায়ই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত ঘটে। এতে বহু হতাহত হয়।

মাওবাদীরা দরিদ্র ভারতীয় কৃষক ও ভূমিহীন শ্রমিকদের জমির ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ দেওয়া ও খনিজ সম্পদে নিম্নশ্রেণির মানুষের হিস্যা রাখার দাবি জানিয়ে আসছে। সেজন্য সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে চায় তারা।

ছত্তিশগড় রাজ্যের পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবারের স্থানীয় সময় সকালের দিকে সংঘর্ষের পর তারা অন্তত ১০ জনের মরদেহ ও বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করেছে।

১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সাত ধাপের সংসদীয় নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে ভারতীয়রা। ৪ জুন ভোট গণনা হওয়ার কথা।

নকশাল শব্দটা এসেছে পশ্চিমবঙ্গের নকশালবাড়ির ছোট্ট গ্রামের সূত্র ধরে যেখানে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা চারু মজুমদার ও কানু সান্যাল ১৯৬৭ সালে সরকার ও সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করেছিলেন।

২০০৬ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মাওবাদী সহিংসতাকে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি বলে বর্ণনা করার পর শুরু হয় ‘‘অপারেশন গ্রিন হান্ট’’।

২০০৯ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম সংসদে জানান, দেশে মাওবাদী প্রভাবিত জেলার সংখ্যা ২২৩। তবে তাদের প্রভাব মূলত দেশের দশটি রাজ্যের প্রায় ৭৫টি জেলায় বলে মনে করা হয়।

ভারতের ইউপিএ সরকারের আমলে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভিযান শুরু হয় যা এনডিএ সরকারের আমলেও গত দশ বছর যাবত অব্যাহত রয়েছে।

বস্তারের আইজিপি সুন্দররাজ বলেছেন, “গত সাড়ে তিন মাসে বস্তার ডিভিশনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৭৯ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে। বিপুল পরিমাণ অর্থও উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হচ্ছে মাওবাদীদেরও। এর ফলে তাদের ইকোসিস্টেমের ওপর প্রভাব পড়েছে।”

ছত্তিশগড় রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর মাওবাদীদের বিরুদ্ধে প্রচার জোরদার হলেও ১৬ এপ্রিলের সংঘর্ষের পর রাজ্য সরকার মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেয়।

রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘হিংসা দিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান করা যায় না। তাই সরকার মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।”

তার কথায়, ‘‘বন্দুকের নলের মুখে উন্নয়নও হতে পারে না, তাই আলোচনার পথ অবলম্বন করাই ভাল।”

গত তিন দশক ধরে যদিও বস্তার অঞ্চলে মাওবাদী এবং পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে সংঘর্ষই চলছে, আলোচনা হয়নি।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত