নড়াইলের একটি আবাসিক হোটেলে পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলাম (২৭)কে তারই তালাক প্রাপ্ত দ্বিতীয় স্ত্রী ডলি খানম বিশেষ অঙ্গ ধারালো ব্লেড দিয়ে কেটে দেয়ার ঘটনায় পরিবার মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকেলে নড়াইল সদর থানায় ইমদাদুলের বাবা ডলি খানমের বিরুদ্ধে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা করেন। ইমদাদুল ইসলাম লোহাগড়া উপজেলার হামরোল (আমাদা) গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য বজলেয়ার রহমান মল্লিকের ছেলে। পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলাম যশোর পুলিশ লাইনে কর্মরর্ত আছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে যশোরে কর্মরর্ত থাকা অবস্থায় পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলামের পরিচয় হয় যশোর সদরের ডলি খানমের সাথে। ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তাদের সম্পর্ক গড়ায় বিয়েতে। পারিবারিক কলহের জেরে পরের বছর ২০২৩ এর ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদস্য তার দ্বিতীয় স্ত্রী ডলিকে তালাক দেন। পরে ডলি খানম ইমদাদুলের বিরুদ্ধে যশোরের আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন। ইমদাদুল ও পরবর্তীতে ডলির বিরুদ্ধে নড়াইল আদালতে মামলা করেন।
গত সোমবার (১০জুন) যশোর আদালতে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ডলির করা মামলার হাজিরার দিনে আদালত চত্বরেই দুইজনের মধ্যে ৩ লাখ টাকার চুক্তিতে মামলা নিষ্পত্তির আলোচনা হয়। পরদিন মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে নিরিবিলি স্থানে কথা বলার জন্যেই নড়াইল পৌর এলাকার আলাদাতপুরে একটি আবাসিক হোটেলে প্রবেশ করে। সেখানেই সুযোগ বুঝে ডলি খানম ইমদাদুলের বিশেষ অঙ্গে ধারালো ব্লেড দিয়ে আঘাত করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে নড়াইল সদর হাসপাতাল ও পরে যশোর আড়াইশ শয্যা হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে নেয়া হয়।
উল্লেখ্য,গত মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুর ১টা ৪৮ মিনিটে নড়াইলের পুরাতন বাস টার্মিনাল এলাকার একটি আবাসিক হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কালো শার্ট পরিহিত পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলাম তার সাবেক স্ত্রীকে নিয়ে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে হোটেলে প্রবেশ করছেন।
ঘটনার দিন বিকেল ইমদাদুল ইসলাম অস্বাভাবিক অবস্থায় বিশেষ অঙ্গ চেপে ধরে হোটেলের সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নামছেন, তার পেছনে ডলি খাতুন ও তড়িঘড়ি করে নামছেন। ডলি খানম দৌড়ে হোটেল থেকে বাহিরে চলে যেতে দেখা যায়। এর ঠিক এক মিনিট পর ইমদাদুল দৌড়ে আবার হোটেল রুমে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়েই আবার দৌড়ে হোটেল থেকে বের হয়ে যান। ঘটনার দিন রাতেই অভিযুক্ত ডলি খাতুন কে যশোর পুলিশ আটক করে। তার দেয়া তথ্য মতে নড়াইল সদর থানা পুলিশ হোটেলের কক্ষ থেকে ইমদাদুলের শার্টসহ বেশ কিছু আলামত জব্দ করে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদস্য ইমদাদুল ইসলামের বাবা বজলেয়ার রহমান মল্লিক বলেন, আমার ছেলের অপারেশন হয়েছে। সে এখন পর্যন্ত শঙ্কা মুক্ত নয়। মামলার বিষয়ে তিনি বলেন,তার চিকিৎসার জন্য ছোটাছুটি করতে গিয়ে এবং কর্মস্থলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনার অপেক্ষার জন্য মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মামলার সত্যতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।