‘ভারতের সঙ্গে পানির সমাধান না হলে বাংলাদেশের খাদ্যঝুড়ি ঝুঁকিতে পড়বে’

ন্যাশনাল ডেস্ক এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
‘ভারতের সঙ্গে পানির সমাধান না হলে বাংলাদেশের খাদ্যঝুড়ি ঝুঁকিতে পড়বে’
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও ভারতে আগের সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় আছে। এর আগেও বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশ পরস্পর সহযোগিতা করেছে। আর সে কারণে দুই সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী বলে মনে করেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তবে দুই দেশের মধ্যে পানিবণ্টন সমস্যার সমাধান না হলে বাংলাদেশের খাদ্যঝুড়ি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

শুক্রবার (১৪ জুন) দৈনিক ভোরের কাগজ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারতের নতুন সরকার: সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন দিগন্তের নতুন সূচনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন।

বৈঠকে শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের নতুন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যশা অনেক। এর কারণ আগে অনেক কিছু অর্জিত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে যাচ্ছেন। আমরা আশা করি, দুপক্ষই নতুন কিছু অর্জন করতে পারবে।

ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে ন্যায্যহিস্যা আদায় করা সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পানি আমাদের প্রাপ্য। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি কেন হয়নি, এ বিতর্কে আমি যাবো না। আমি এখন ভীত, কারণ শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা নদীর মধ্যখানের চরে আমি গাড়ি নিয়ে যেতে পারি। পানি সমস্যার সমাধান না হলে বাংলাদেশে খাদ্য ঝুড়ি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে।’

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মুবিন চৌধুরী বলেন, ‘দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকের দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার ভারতে যাচ্ছেন। অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে জটিলতা আছে। তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি এখনও হয়নি এবং গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ আগামী ২০২৬ সালে শেষ হবে।’ পানিবণ্টন নিয়ে যারা আলোচনা করেন, তাদের বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে বলে তিনি জানান।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে টানা ১০ বছর ক্ষমতায় বিজেপি সরকার। এবছর দলটি নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেনি। ফলে অন্য দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠন করতে হচ্ছে তাদের। এবারের নির্বাচনে ভারতে যে পরিবর্তন এসেছে, ‘সেটি ভালো’ উল্লেখ করে চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, ‘ভারতে ধর্মীয় উন্মাদনা থাকলে, তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে পারে।’

তিস্তা নদী নিয়ে একটি প্রকল্পের বিষয়ে চীনকে জানালে তারা ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চীন এ বিষয়ে আগ বাড়িয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, এ তথ্য ঠিক নয়। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ভারত এখন আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং এ বিষয়ে প্রথমে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে যে, বাংলাদেশ কতটুকু পানি পাবে।’

ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আছে এবং সেটি ক্রয়, প্রশিক্ষণ, মহড়া ইত্যাদির মধ্যে সীমাবদ্ধ।’ যে কোনও সামরিক চুক্তি সতর্কতার সঙ্গে পরিহার করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে সোনালি অধ্যায় চলছে, কিন্তু এরমধ্যেও কিছু টানাপোড়েন আছে।’ ১৫ দিনের মধ্যে আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফর প্রমাণ করে, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা কতটুকু বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাহাব আনাম খান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট নুরুল ইসলাম হাসিব, ভারতীয় সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী ও দেবদীপ পুরোহিত বক্তব্য দেন।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

‘ভারতের সঙ্গে পানির সমাধান না হলে বাংলাদেশের খাদ্যঝুড়ি ঝুঁকিতে পড়বে’

‘ভারতের সঙ্গে পানির সমাধান না হলে বাংলাদেশের খাদ্যঝুড়ি ঝুঁকিতে পড়বে’
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও ভারতে আগের সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় আছে। এর আগেও বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশ পরস্পর সহযোগিতা করেছে। আর সে কারণে দুই সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী বলে মনে করেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তবে দুই দেশের মধ্যে পানিবণ্টন সমস্যার সমাধান না হলে বাংলাদেশের খাদ্যঝুড়ি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

শুক্রবার (১৪ জুন) দৈনিক ভোরের কাগজ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারতের নতুন সরকার: সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন দিগন্তের নতুন সূচনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন।

বৈঠকে শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের নতুন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যশা অনেক। এর কারণ আগে অনেক কিছু অর্জিত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে যাচ্ছেন। আমরা আশা করি, দুপক্ষই নতুন কিছু অর্জন করতে পারবে।

ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে ন্যায্যহিস্যা আদায় করা সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পানি আমাদের প্রাপ্য। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি কেন হয়নি, এ বিতর্কে আমি যাবো না। আমি এখন ভীত, কারণ শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা নদীর মধ্যখানের চরে আমি গাড়ি নিয়ে যেতে পারি। পানি সমস্যার সমাধান না হলে বাংলাদেশে খাদ্য ঝুড়ি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে।’

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মুবিন চৌধুরী বলেন, ‘দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকের দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার ভারতে যাচ্ছেন। অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে জটিলতা আছে। তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি এখনও হয়নি এবং গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ আগামী ২০২৬ সালে শেষ হবে।’ পানিবণ্টন নিয়ে যারা আলোচনা করেন, তাদের বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে বলে তিনি জানান।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে টানা ১০ বছর ক্ষমতায় বিজেপি সরকার। এবছর দলটি নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেনি। ফলে অন্য দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠন করতে হচ্ছে তাদের। এবারের নির্বাচনে ভারতে যে পরিবর্তন এসেছে, ‘সেটি ভালো’ উল্লেখ করে চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, ‘ভারতে ধর্মীয় উন্মাদনা থাকলে, তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে পারে।’

তিস্তা নদী নিয়ে একটি প্রকল্পের বিষয়ে চীনকে জানালে তারা ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চীন এ বিষয়ে আগ বাড়িয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, এ তথ্য ঠিক নয়। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ভারত এখন আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং এ বিষয়ে প্রথমে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে যে, বাংলাদেশ কতটুকু পানি পাবে।’

ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আছে এবং সেটি ক্রয়, প্রশিক্ষণ, মহড়া ইত্যাদির মধ্যে সীমাবদ্ধ।’ যে কোনও সামরিক চুক্তি সতর্কতার সঙ্গে পরিহার করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে সোনালি অধ্যায় চলছে, কিন্তু এরমধ্যেও কিছু টানাপোড়েন আছে।’ ১৫ দিনের মধ্যে আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফর প্রমাণ করে, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা কতটুকু বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাহাব আনাম খান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট নুরুল ইসলাম হাসিব, ভারতীয় সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী ও দেবদীপ পুরোহিত বক্তব্য দেন।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত