ছাগল দিয়ে চিহ্নিতের আগেই মতিউরদের চিহ্নিত করুন: বাহাউদ্দিন নাছিম

ন্যাশনাল ডেস্ক এজেড নিউজ বিডি, ঢাকা
ছাগল দিয়ে চিহ্নিতের আগেই মতিউরদের চিহ্নিত করুন: বাহাউদ্দিন নাছিম
বাহাউদ্দিন নাছিম

সম্প্রতি ১৫ লাখ টাকায় কোরবানির ছাগল কেনার মধ্য দিয়ে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমানের প্রসঙ্গ টেনে ঢাকা-৮ আসনের এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে থাকা মতিউরদের ছাগল বা বোবা প্রাণী দিয়ে চিহ্নিত করার আগে চিহ্নিত করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছিম দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ায় অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সমালোচনাও করেছেন। তিনি বলেন, বিবৃতির মাধ্যমে কর্মকর্তার দুর্নীতির দায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিচ্ছে।

বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন বাহাউদ্দিন নাছিম।

তিনি বলেন, যারা রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকেন যেমন মতিউরকে— দুর্নীতি দমন কমিশন, গণমাধ্যম এমনকি আমরা যারা রাজনীতিবিদ আছি তারা চিহিৃত করতে পারি নাই। তাকে একটি বোবা প্রাণী ছাগল চিহিৃত করেছে। এমন মতিউর আরও আছে কিনা, ভবিষ্যতে ছাগল বা অন্য কোনও বোবা প্রাণী চিহিৃত করার আগে তাদের চিহিৃত করার প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সংস্থার।

এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয় তার এক পুত্রের ছাগল কেনাকে কেন্দ্র করে। একটি খামার থেকে ১৫ লাখ টাকায় পুত্রটি ছাগল কিনেছেন— এমন খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে গণমাধ্যমে খবর বের হয় যে কেবল ছাগল নয়, লাখ লাখ টাকা খরচ করে ওই পুত্র কোরবানির পশু কিনেছেন। এরই জেরে বেরিয়ে আসে মতিউর রহমানের বিপুল অর্থবিত্তের কাহিনী।

নাছিম বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে, সেক্ষেত্রে তারা যেন এ বোবা ছাগলের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলা, বিবৃতি দেওয়া, পক্ষ নিয়ে প্রকারান্তরে দুর্নীতিবাজ কোনও ব্যক্তিকে রক্ষার নামে তাদের সংস্থার সকলের উপর দায়ভার না চাপায় সেদিকে সকলের সজাগ থাকা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, কোনও রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতি বা অপকর্মের অভিযোগ আসে তখন রাজনীতিবিদরা পদক্ষেপ নেয় বা পক্ষ নেয় না। বরং রাজনৈতিক পদক্ষেপ ও আইনি বিচারে সোচ্চার হয়। এটাই হল সৎ রাজনীতিবিদদের মহত্ত্ব। কিন্তু কখনও আমরা দেখতে পাই— কোনও সরকারি বা বেসরকারি, আধা-সরকারি কিংবা সংস্থা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ যখন আসে, তখন ওই গোষ্ঠী বা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজের পক্ষে সাফাই বক্তৃতা-বিবৃতি প্রদান করে। প্রকারান্তরে বিশেষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের দায় কিন্তু ওই সংস্থাগুলো গ্রহণ করে। পুরো সংস্থার উপর চলে আসে এ দায়। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

সম্প্রতি পুলিশের সাবেক একাধিক কর্মকর্তার দুর্নীতির সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ঘটনার পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দেয় পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি— প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা বেসরকারি যে কোনও দলের বা সংস্থার হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিকে বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে।

ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে ভবিষ্যতে ঋণ খেলাপি কমাতে হবে বলে উল্লেখ করেন নাছিম। তিনি বলেন, ঋণ খেলাপি, অর্থপাচারকারী, ব্যাংক লুটেরা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট যারা করে তাদের চিহিৃত করতে হবে। তাদের তালিকা প্রণয়ন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। নাছিম বলেন, বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে এই দুষ্টচক্র, সর্বগ্রাসী, স্বার্থান্বেষী চক্রের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে।

নাছিম বলেন, দেশের সকল অর্জন হয়েছে আওয়ামী লীগ ও রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বে। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল, যারা সুদখোর বা বিদেশি প্রভুদের পা-চাটা কুকুর তারা একটু সুযোগ পেলে রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব কলুষিত করে দেশ পরিচালনার সেরা সন্তান হিসাবে নিজেদের প্রমাণ করতে গিয়ে বারবার দেশপ্রেমী জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ছোটরা ধরা পড়লেও রাঘব-বোয়ালরা ধরা পড়ে না। এখন সামনে এসেছে পুলিশের বড় কর্মকর্তা, এনবিআরের বড় কর্মকর্তা— তারা দুর্নীতি করেন। কথায় আছে চোরের ১০ দিন মালিকের একদিন।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ছাগল দিয়ে চিহ্নিতের আগেই মতিউরদের চিহ্নিত করুন: বাহাউদ্দিন নাছিম

ছাগল দিয়ে চিহ্নিতের আগেই মতিউরদের চিহ্নিত করুন: বাহাউদ্দিন নাছিম
বাহাউদ্দিন নাছিম

সম্প্রতি ১৫ লাখ টাকায় কোরবানির ছাগল কেনার মধ্য দিয়ে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমানের প্রসঙ্গ টেনে ঢাকা-৮ আসনের এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে থাকা মতিউরদের ছাগল বা বোবা প্রাণী দিয়ে চিহ্নিত করার আগে চিহ্নিত করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছিম দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ায় অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সমালোচনাও করেছেন। তিনি বলেন, বিবৃতির মাধ্যমে কর্মকর্তার দুর্নীতির দায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিচ্ছে।

বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন বাহাউদ্দিন নাছিম।

তিনি বলেন, যারা রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকেন যেমন মতিউরকে— দুর্নীতি দমন কমিশন, গণমাধ্যম এমনকি আমরা যারা রাজনীতিবিদ আছি তারা চিহিৃত করতে পারি নাই। তাকে একটি বোবা প্রাণী ছাগল চিহিৃত করেছে। এমন মতিউর আরও আছে কিনা, ভবিষ্যতে ছাগল বা অন্য কোনও বোবা প্রাণী চিহিৃত করার আগে তাদের চিহিৃত করার প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সংস্থার।

এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয় তার এক পুত্রের ছাগল কেনাকে কেন্দ্র করে। একটি খামার থেকে ১৫ লাখ টাকায় পুত্রটি ছাগল কিনেছেন— এমন খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে গণমাধ্যমে খবর বের হয় যে কেবল ছাগল নয়, লাখ লাখ টাকা খরচ করে ওই পুত্র কোরবানির পশু কিনেছেন। এরই জেরে বেরিয়ে আসে মতিউর রহমানের বিপুল অর্থবিত্তের কাহিনী।

নাছিম বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে, সেক্ষেত্রে তারা যেন এ বোবা ছাগলের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলা, বিবৃতি দেওয়া, পক্ষ নিয়ে প্রকারান্তরে দুর্নীতিবাজ কোনও ব্যক্তিকে রক্ষার নামে তাদের সংস্থার সকলের উপর দায়ভার না চাপায় সেদিকে সকলের সজাগ থাকা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, কোনও রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতি বা অপকর্মের অভিযোগ আসে তখন রাজনীতিবিদরা পদক্ষেপ নেয় বা পক্ষ নেয় না। বরং রাজনৈতিক পদক্ষেপ ও আইনি বিচারে সোচ্চার হয়। এটাই হল সৎ রাজনীতিবিদদের মহত্ত্ব। কিন্তু কখনও আমরা দেখতে পাই— কোনও সরকারি বা বেসরকারি, আধা-সরকারি কিংবা সংস্থা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ যখন আসে, তখন ওই গোষ্ঠী বা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজের পক্ষে সাফাই বক্তৃতা-বিবৃতি প্রদান করে। প্রকারান্তরে বিশেষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের দায় কিন্তু ওই সংস্থাগুলো গ্রহণ করে। পুরো সংস্থার উপর চলে আসে এ দায়। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

সম্প্রতি পুলিশের সাবেক একাধিক কর্মকর্তার দুর্নীতির সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ঘটনার পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দেয় পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি— প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা বেসরকারি যে কোনও দলের বা সংস্থার হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিকে বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে।

ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে ভবিষ্যতে ঋণ খেলাপি কমাতে হবে বলে উল্লেখ করেন নাছিম। তিনি বলেন, ঋণ খেলাপি, অর্থপাচারকারী, ব্যাংক লুটেরা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট যারা করে তাদের চিহিৃত করতে হবে। তাদের তালিকা প্রণয়ন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। নাছিম বলেন, বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে এই দুষ্টচক্র, সর্বগ্রাসী, স্বার্থান্বেষী চক্রের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে।

নাছিম বলেন, দেশের সকল অর্জন হয়েছে আওয়ামী লীগ ও রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বে। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল, যারা সুদখোর বা বিদেশি প্রভুদের পা-চাটা কুকুর তারা একটু সুযোগ পেলে রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব কলুষিত করে দেশ পরিচালনার সেরা সন্তান হিসাবে নিজেদের প্রমাণ করতে গিয়ে বারবার দেশপ্রেমী জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ছোটরা ধরা পড়লেও রাঘব-বোয়ালরা ধরা পড়ে না। এখন সামনে এসেছে পুলিশের বড় কর্মকর্তা, এনবিআরের বড় কর্মকর্তা— তারা দুর্নীতি করেন। কথায় আছে চোরের ১০ দিন মালিকের একদিন।

এজেড নিউজ বিডি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Download
ঠিকানা: পূর্ব কাজীপাড়া, রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬ নিবন্ধনের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত