কক্সবাজারে তিনটি হত্যা মামলায় চার জনের মৃত্যুদণ্ড ও তিন জনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক মোশারফ হোসাইন পৃথক এ রায় দেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সৈয়দ রেজাউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, একইদিন জেলা দায়রা জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ অন্য একটি হত্যা মামলায় তিন জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
রায়ে কক্সবাজারের মহেশখালী মাতারবাড়িতে রব্বত আলী হত্যা মামলায় তিনজন এবং রামু উপজেলার পানিরছড়া মামুন বাজার এলাকায় খোরশেদ আলম বাবুল হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রব্বত আলী হত্যার তিন আসামিকে দুই লাখ টাকা করে এবং খোরশেদ আলম বাবুল হত্যার আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মৃত্যদণ্ড দেওয়া আসামিরা হলেন, জালাল আহমেদ, আব্দুল মালেক, শামসুল আলম, করিম দাদ, আব্দুল মুনাফ ও শেরে ফরহাদ। তাদের মধ্যে জালাল আহমেদ ও আব্দুল মালেক মারা যান। যাবজ্জীবন দেয়া আসামিরা হলেন, আব্দুস শুক্কুর, মো. ওসমান ও আবু তাহের।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মোজাফফর আহমেদ হেলালী জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ১৯৯৫ সালের ৪ মার্চ কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে ছোট ভাইয়ের নির্দেশে খুন করা হয় রব্বত আলী নামের এক দিনমজুরকে। এ ঘটনায় নিজেকে আড়াল করতে পরের দিন (৫ মার্চ) ৪১ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের ছোট ভাই জালাল আহমেদ। পরে ২০ মার্চ বাদীকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ফৌজদারি দরখাস্ত করেন নিহতের স্ত্রী জুবাইরা বেগম। আদালত মামলা দুটি সিআইডির সিনিয়র অফিসার দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডির পরিদর্শক করিম গণি জালাল আহমেদকে প্রধান করে পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) শওকত বেলাল জানান, ১৯৯৫ সালের ২০ ডিসেম্বর রামু উপজেলার পানিরছড়া মামুন বাজার এলাকায় যাত্রীবাহী ট্যাক্সি ভাড়াকে কেন্দ্র করে চাচাত ভাই শেরে ফরহাদের হাতে খুন হন খোরশেদ আলম বাবুল। নিহত বাবুল ভারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভূঁইয়ার ছেলে। একইদিন আবুল কাশেম বাদী হয়ে শেরে ফরহাদ ও তার বাবা সিরাজুল ইসলামকে আসামি করে রামু থানায় মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা রামু থানার তৎকালীন এসআই মোহাম্মদ মোস্তফা তাদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আজ শেরে ফরহাদের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অপর আসামি মৃত্যুবরণ করায় তাকে অব্যাহতি দেন আদালত।