জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, এই বিপ্লবের ফল কেউ যাতে ‘হাইজ্যাক’ করতে না পারে, সেজন্য এ প্রজন্মের যুবকদের এবং দেশবাসীকে সোচ্চার থাকতে হবে। কোনো মতলববাজ, রাজনৈতিক বা অন্য কোনো অপশক্তিকে এলাউ করব না। আমরা প্রত্যেকেই পাহারাদার হিসেবে জাতির অধিকারকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করব।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক হলেন আবু সাঈদ। নৈতিক ঋণ পরিশোধ করতে আমরা এখানে এসেছি। শুধু বাংলাদেশের নয়, সাঈদ এখন দুনিয়াবাসীর সম্পদ। আবু সাঈদ নিজেই একটা ইতিহাস। যারা শহিদ হয়েছেন, জীবন দিয়েছেন, তারা প্রত্যেকটা এক একটা ইতিহাস। যারা লড়াই করে গাজী হিসেবে বেঁচে আছে তারাও ইতিহাস।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মোহাম্মদ ইউনুসের ব্যাপারে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এই বিপ্লব আমরা করিনি, এ বিপ্লব করেছে আমাদের যুব সমাজ। এরা আমাদের সন্তান, এরা আমাদের বিপ্লবের এই আন্দোলনে ভুল করে নাই। আমরা বিশ্বাস করি এরা এখনও ভুল করবে না। তাদের সঙ্গে কথা বলে আগামীর দিকনির্দেশনা নিতে হবে।
এর আগে সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে পীরগঞ্জের জাফরপাড়া বহুমুখী কামিল মাদ্রাসা মাঠে আসেন তিনি। পরে সেখানে একটি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে আবু সাঈদের বাড়িতে যান। সেখানে আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় পরিবারের হাতে নগদ এক লাখ টাকা এবং আজীবন তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, রংপুর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, মহানগর জামায়াতের আমির এটিএম আজম খান, সেক্রেটারি আবু ওবায়দুল্লাহ সালাফি, মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি গোলাম জাকারিয়া, সেক্রেটারি নুরুল হুদাসহ জামায়াত ও ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আবু সাঈদ। কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে পুলিশ-ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। পরদিন ১৭ জুলাই তাকে পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।