১০ বছর পর নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয়খরা কাটায় বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ জয়ে নিগার সুলতানা জ্যোতিদের স্বপ্ন যেন আরও চকচকে হয়ে ওঠে। ইংল্যান্ডের কাছে দ্বিতীয় ম্যাচে হারলেও তাদের নাগালের মধ্যে রাখতে পারার সার্থকতা বেশ আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছিল তাদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও জয়ের বিশ্বাস মনের মধ্যে রোপণ করেছিল। কিন্তু একবারের সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের কাছে কোনও পাত্তাই পেলো না বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার রাতে আরেকবার ব্যাটিং ব্যর্থতায় কোনোরকমে স্কোরবোর্ডে ১০৩ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। সহজ সেই লক্ষ্য ৪৩ বল হাতে রেখে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ছুঁয়ে ফেলে ক্যারিবিয়ান মেয়েরা। এখনও বাংলাদেশ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায়নি, গাণিতিকভাবে তাদের সেমিফাইনালের আশা টিকে আছে। কিন্তু বাস্তবিকভাবে তা অসম্ভব বলা চলে।
চলতি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে করে ১০৩ রান। জবাবে খেলতে নেমে ক্যারিবিয়ান দুই ওপেনার হেইলি ম্যাথিউস ও স্ট্যাফানি টেলরের ৫২ রানের জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলে। সর্বোচ্চ রান করা ম্যাথিউসকে ফিরিয়ে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার মারুফা আক্তার। এরপর টেলর (২৭) স্বেচ্ছায় অবসর নিলে শেমাইন ক্যাম্পবেল ও ডিয়েন্দ্রা ডটিন মিলে জয়ের কাছাকাছি দলকে নিয়ে যান। তবে দলীয় ৮৪ রানের মাথায় নাহিদার ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে স্ট্যাম্পিং হন ক্যাম্পবেল (২১)। শেষমেষে ১২.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যটা ছুঁয়ে ফেলেন তারা। ১৩তম ওভারে তিন বলের মধ্যে দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জেতান ডটিন। তিনি ১৯ রানে অপরাজিত ছিলেন ও চিনেলি হেনরি ২ রানে খেলছিলেন।
এর আগে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ পায় বাংলাদেশ। দারুণ শুরুর পর দলীয় ৩৩ রানের মধ্যে বাংলাদেশের দুই ওপেনার বিদায় নেন। সাথী রানি ১২ বলে ৯ এবং দিলারা ১৮ বলে ১৯ রান করেন। দুজনকেই ফেরান অফ স্পিনার কারিশমা রামহারাক। তৃতীয় উইকেটে ৪০ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক নিগার ও সোবহানা মোস্তারি। ২২ বলে ১৬ রান করা মোস্তারিকেও কারিশমা ফেরালে জুটি ভাঙে। এরপরই একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ।
একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে সতীর্থদের আসা যাওয়াই কেবল দেখেছেন অধিনায়ক নিগার। ইনিংসের শেষ ওভারে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে তিনি আউট হন। তার আগে ৪ চারে ৪৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
এই রান করার পথে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ২ হাজার রান পূর্ণ করেন নিগার।
ক্যারিবিয়ান বোলারদের মধ্যে ৪ ওভারে ১৭ রানে ৪ উইকেট নেন কারিশমা। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কারটি বাগিয়ে নেন তিনি। এছাড়া আফি ফ্লেচার নেন দুটি উইকেট।
আগের ম্যাচগুলোর মতো এবারও ব্যাটিং ব্যর্থতার খেসারত দিতে হয়েছে গোটা দলকে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে কোনোরকমে ১১৯ রান করেছিল। পরের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিল ৯৭ রান। তৃতীয় ম্যাচে এসেও স্কোরবোর্ডে বড় রান নেই বাংলাদেশের। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে আরও একটি ম্যাচ রয়েছে। যদিও ওই ম্যাচ জিতলেও কোন লাভ নেই। তবে ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটানোর জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা হতে পারে বাংলাদেশের দলের শেষ সুযোগ, তাছাড়া শেষটা জয়ে রাঙানো হতে পারে স্মরণীয় একটা ব্যাপার।
তিন ম্যাচে দ্বিতীয় জয়ে ‘বি’ গ্রুপে চার পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সমান পয়েন্ট নিয়েও রানরেটে তাদের পরে অবস্থান করছে যথাক্রমে দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ তিন ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে।