চুনারুঘাটের লস্করপুর ভ্যালির ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) ৪টি চা বাগানে বকেয়া মজুরির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাগান বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা। এতে বাগানে কয়েক লাখ কেজি তৈরি চা আটকা পড়ার পাশাপাশি বাগানে নষ্ট হচ্ছে কাঁচা পাতা। দেড়মাস ধরে মজুরি ও ৭ দিন ধরে বাগান বন্ধ থাকায় সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে চন্ডিছড়া বাগানের শ্রমিকরা পুরাতন মহাসড়ক অবরোধ করে। দুই ঘণ্টা অবরোধের পর তারা শনিবার থেকে পুনরায় অবরোধের ঘোষণা দেন। এতে বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি রনজিক কর্মকার, গর্জন নায়েক, পুস্প বাউরিসহ অনেকেই বক্তব্য দেন।
এনটিসির মালিকানাধীন ১২টি চা বাগানের মধ্যে লস্করপুর ভ্যালির মধ্যে চন্ডিছড়া, পারকুল, সাতছড়ি, তেলিয়াপাড়া ও জগদীশপুর চা বাগানে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তারা দৈনিক ১৭০ টাকা মজুরি হিসেবে প্রতি সপ্তাহে সেই হাজিরা পান। কিন্তু এনটিসির ১২টি বাগানেই গত ২২ আগস্ট থেকে অর্থ সংকটে তাদের মজুরি প্রদান বন্ধ রয়েছে।
এরপর থেকে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন এবং বাগানের চা নিলামে পাঠানো বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে গত দুর্গাপূজায় শ্রমিকদের বোনাস ও মাত্র ৩ সপ্তাহের মজুরি প্রদান করে। বর্তমানে তাদের ৭ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এ অবস্থায় গত ১৭ অক্টোবর থেকে শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাগান বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন শুরু করে।
বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি রনজিত কর্মকার জানান, মজুরি না পেয়ে শ্রমিকরা খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছে। বকেয়া মজুরি প্রদান করা না হলে আমরা বাগান চালু করব না। অকশনে নিলামের কোনো চালানও দিব না। চা পাতা বিক্রি করে আমাদের মজুরি দিতে হবে।
চন্ডিছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক সেলিমুর রহমান জানান, বোর্ডের সমস্যার কারণে আমরা আর্থিক সংকটে পড়েছি। তারপরও আমরা তাদের পূজার বোনাস ও তিন সপ্তাহের মজুরি দিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে মজুরি নিয়মিত করা যায়। কিন্তু নিলাম চা না পাঠাতে পারার কারণে বাগানে দেড় লাখ কেজি চা আটকা পড়েছে।