হিজরি সনের সঙ্গে মুসলিম উম্মাহর মৌলিক, ঐতিহাসি
ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় জন্মভূমি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের ঐতিহাসিক ঘটনা।
হিজরত : ইসলামের ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা
ইসলামের ইতিহাসে হিজরত এক যুগান্তকারী ঘটনা। বৈশ্বিক ইতিহাসেও এর তাৎপর্য অপরিসীম। ইতিহাসবিদ জোসেফ হেল যথার্থই বলেছেন— হিজরত বিশ্বনবীর জীবন ও কর্মে নতুন গতিপথ তৈরি করে। ইসলামের ইতিহাসে বৃহৎ দিগন্তের উন্মোচন করে। এটি দ্বীন ও মানবতার বৃহত্তম স্বার্থে ত্যাগ ও বিসর্জনের এক সাহসী পদক্ষেপ।
দাওয়াতের সূচনা ও প্রতিকূলতা
মহানবী (সা.) ৬১০ খ্রিস্টাব্দে নবুওয়াত প্রাপ্ত হন। প্রথমে গোপনে তিন বছর দাওয়াত দেন। পরে আল্লাহর নির্দেশে সাফা পাহাড়ে প্রকাশ্যে তাওহিদের আহ্বান জানান। তখন থেকেই শুরু হয় কাফিরদের নির্যাতন, উপহাস ও শত্রুতা।
দারুন নদওয়ার ষড়যন্ত্র
মক্কার কাফিররা নবীজির দাওয়াত বন্ধ করতে বারবার বৈঠক করত। একদিন দারুন নদওয়ায় তারা সর্বশেষ ষড়যন্ত্র করে। কেউ তাকে বন্দি করার, কেউ নির্বাসিত করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সবশেষে আবু জাহেল হত্যার ষড়যন্ত্র প্রস্তাব করে।
কোরআনের দলিল
আল্লাহ বলেন— স্মরণ করো, কাফিররা তোমাকে বন্দি বা হত্যা করার জন্য কিংবা নির্বাসিত করার চক্রান্ত করে। তারা চক্রান্ত করে; আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেন। আর আল্লাহ শ্রেষ্ঠতম কৌশলী।
(সুরা আনফাল: ৩০)
আল্লাহর পরিকল্পনা ও হিজরতের নির্দেশ
কাফিরদের সব ষড়যন্ত্র আল্লাহ নস্যাৎ করেন। তিনি তাঁর রাসুল (সা.)-কে হিজরতের নির্দেশ দেন। নবীজী (সা.)-এর চাচাতো ভাই আলী (রা.)-কে নিজের বিছানায় রেখে তিনি প্রিয় সঙ্গী আবু বকর (রা.)-কে নিয়ে মদিনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
নবীজির মক্কার প্রতি ভালোবাসা
প্রিয় জন্মভূমি ত্যাগের মুহূর্তে রাসুল (সা.) মক্কার দিকে তাকিয়ে আবেগভরা কণ্ঠে বলেন— হে মক্কা! খোদার কসম, তুমি আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় শহর, আমার প্রতিপালকের কাছেও সবচেয়ে প্রিয় তুমি। যদি তোমার অধিবাসীরা আমাকে বের করে না দিতো, আমি কখনো বের হতাম না। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৯২৫)