রবিউল ইসলাম শাকিল: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দিন দিন কমছে। প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী থাকলেও প্রতিদিন গড়ে ১০০ জনেরও কম শিক্ষার্থী এ গ্রন্থাগার ব্যবহার করছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, লাইব্রেরিতে প্রয়োজনীয় বই পাওয়া যায় না। অধিকাংশ বই পুরনো ও পাঠের অনুপযোগী। টেবিল–চেয়ারে ধুলোবালি জমে থাকার কারণে আরামদায়ক পাঠপরিবেশও অনুপস্থিত। চাহিদামতো বই না পাওয়া গেলে বাইরে থেকে বই এনে পড়ারও সুযোগ নেই। এছাড়া শিক্ষার্থীরা ডেস্কে রাখা বই যথাসময়ে নির্ধারিত যায়গায় ফেরত না দেওয়ায় অন্যদের বই খুঁজে পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রন্থাগারের তিন তলায় পড়াশোনার ব্যবস্থা থাকলেও প্রতিটি ফ্লোরে চার-পাঁচজনের বেশি শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না। টেবিলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে বই, চারপাশে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। কোথাও লাইট বা ফ্যান নষ্ট হয়ে আছে, যা শিক্ষার্থীদের বাড়তি ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম মুনতাসির দিপু বলেন, “লাইব্রেরিতে প্রয়োজনীয় বই মেলে না। ভেতরে প্রবেশের সময় ব্যাগ জমা দিতে হয়, ফলে দরকারি খাতা বা বই সঙ্গে নেওয়া যায় না। তৃতীয় তলায় পড়ার জন্য চেয়ার-টেবিল থাকলেও সেখানে ফ্যান নেই, রক্ষণাবেক্ষণও হয় না। দ্বিতীয় তলায় বিভাগীয় বই রাখার কথা থাকলেও বেশিরভাগ পাওয়া যায় না। এসব কারণে আমরা ধীরে ধীরে লাইব্রেরি থেকে বিমুখ হয়ে যাচ্ছি।”
ফিনাস এন্ড ব্যাংকিং এর এক শিক্ষার্থী জানান,“চাকরির প্রস্তুতির জন্য লাইব্রেরিতে আসি, কিন্তু নতুন সংস্করণের বই নেই। পুরোনো বইও মেলে না। বাইরে থেকেও নিজের বই আনা যায় না। কোথাও ফ্যান নষ্ট, কোথাও অপ্রীতিকর পরিবেশ। চাকরির প্রস্তুতি ও একাডেমিক পড়াশোনার জন্য এই লাইব্রেরি মোটেও উপযুক্ত নয়।”
ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ বলেন, “এখানে পর্যাপ্ত একাডেমিক বই নেই, চাকরির বইও পাওয়া যায় না। অনেক ফ্যান নষ্ট, পড়াশোনার পরিবেশ অনুকূল নয়। ফলে লাইব্রেরিতে যাওয়ার আগ্রহ কমছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক ড. মো. মোহা. আজিজুর রহমান বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি মাসখানেকের মধ্যেই দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে। লাইব্রেরিতে এসি ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তৃতীয় তলায় দাঁড়িয়ে পত্রিকা পড়ার জন্য আলাদা কর্নার তৈরি হবে। দ্বিতীয় তলায় বিশেষ কক্ষে শিক্ষার্থীরা বাইরে থেকে বই নিয়ে পড়তে পারবেন। পাশাপাশি নতুন বই কেনার প্রক্রিয়াও চলছে, যা শিগগিরই শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।”