ভ্রমণ মানুষের মানসিক প্রশান্তির অন্যতম বড় মাধ্যম। জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে কিংবা নতুনকে জানার আকাঙ্ক্ষায় মানুষ ঘুরতে যায়। বাংলাদেশ ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য যেন এক সম্ভাবনার দেশ। ছোট্ট ভূখণ্ড হলেও এখানে রয়েছে পাহাড়, সমুদ্র, নদী, বন, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও অজস্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
কক্সবাজার: বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার—বাংলাদেশের ভ্রমণ মানচিত্রে শীর্ষে রয়েছে। ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বালুকাবেলায় প্রতিদিন হাজারো মানুষ ভিড় করেন। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। এখান থেকে মহেশখালী দ্বীপ, সোনাদিয়া দ্বীপ ও ইনানী সমুদ্র সৈকত সহজেই ঘুরে আসা যায়।
সুন্দরবন: বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, কুমির, নানা প্রজাতির পাখি এবং উদ্ভিদরাজির সমাহার এই বনকে করেছে অনন্য। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে।
সিলেট: চা-বাগান ও ঝর্ণার দেশ
সবুজে ঘেরা সিলেটের চা-বাগান ভ্রমণকারীদের জন্য এক স্বর্গরাজ্য। জাফলং, বিছানাকান্দি, রাতারগুল জলাবন ও মাধবকুণ্ড ঝর্ণা ভ্রমণপিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান। এখানকার পাহাড়ি নদী ও ঝর্ণার স্রোত যে কাউকে মোহিত করে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সাজেক ভ্যালি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম: রঙিন সংস্কৃতির পাহাড়
রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান—এই তিন পার্বত্য জেলা ভ্রমণের জন্য অসাধারণ। নীলগিরি, বগালেক, সাজেক ভ্যালি, কাপ্তাই হ্রদ ও চিম্বুক পাহাড় প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে অপরিহার্য গন্তব্য। পাশাপাশি স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ভ্রমণকে করে আরও সমৃদ্ধ।

বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ।
ঐতিহাসিক স্থাপনা: ইতিহাসের পথে হাঁটা
বাংলাদেশের প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় স্থাপত্য ভ্রমণকে করে ভিন্ন মাত্রার। মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, ষাট গম্বুজ মসজিদ, আহসান মঞ্জিল, লালবাগ কেল্লা—প্রতিটি স্থাপনা যেন অতীত ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে।
কেন ভ্রমণ প্রয়োজন
ভ্রমণ শুধু বিনোদনের জন্য নয়; বরং শিক্ষারও একটি বড় মাধ্যম। এটি মানুষকে নতুন সংস্কৃতি, নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভ্রমণ মানসিক চাপ কমায়, সৃজনশীলতা বাড়ায় এবং সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করে।