আগে যাইতাম নৌকা দিয়ে এহন সেতু হইছে উঠি মই দিইয়া নামি আবার সেই মই দিইয়া। অনেক টাহা খরচ কইরা কি লাভ হইলো সেতু দিইয়া? উঠতে হয় কষ্ট কইরা এমন কথাগুলো আক্ষেপ করে বলেন কালিগঞ্জ বাজারের ষাটোর্ধ্ব বয়সী বাসিন্দা আব্দুল আজিদ। উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের কালীগঞ্জ বাজারের ঘেঁষে নরসুন্দা নদীতে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সংযোগ সড়ক না থাকায় ৭ কোটি টাকা ৪১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু কাজে আসছে না। ফলে ভোগান্তি নিয়েই মই বেয়ে চলাচল করছে ১০-১২ গ্রামের বাসিন্দারা।
ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের ৪ কিলোমিটার পূর্বে উপজেলার কালীগঞ্জ বাজারের ঘেঁষে নরসুন্দা নদীর উপর সেতুটি। সেতুটির পূর্ব প্রান্তে রয়েছে ৮-১০ টি গ্রাম। যে গ্রাম গুলোতে অধিক পরিমাণ কৃষিপণ্য উৎপাদিত হয়। অন্যদিকে পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে কালীগঞ্জ বাজার, অগ্রণী ব্যাংকের শাখা সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মুশুল্লি রেলওয়ে ষ্টেশন। সেতু নির্মাণের আগে দুই প্রান্তের মানুষজন বর্ষাকালে নৌকা ও শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতো।
সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০২০ সালের ৭ জুন সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। সেতুটি ৯৬ মিটার লম্বা সংযোগ সড়ক থেকে ১০-১২ ফুট উচু। সেতুর দু-প্রান্তে সংযোগ সড়ক না থাকায় চলাচলের জন্য বাঁশের মই বানানো হয়েছে। বয়স্ক, শিশু বাচ্চা ও মহিলারা ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে চলাচল করছে। যানবাহন না চলায় অনেকটা কষ্ট করেই চলছে সেতুর দুপ্রান্তের মানুষের যোগাযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম পিতুল বলেন, সেতুটি নির্মাণে ফলে আমাদের এলাকার যোগাযোগ নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় বর্তমানে সেতুটি কোন উপকারে আসছে না। যতদ্রুত সম্ভব সেতুর দু-প্রান্তে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে চলাচলের উপযোগী করা হউক।
সেতুর নির্মাণের ঠিকাদার আব্দুল গণি ভূঁইয়া বলেন, নরসুন্দা নদীর উপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ নদী দিয়ে সিলেটের তাহিরপুর থেকে প্রচুর পরিমাণ পাথর আমদানি করে তারেরঘাট বাজারের ব্যবসায়ীরা। সে সুবাদে সেতুটি ১০-১২ ফুট সংযোগ সড়ক থেকে বেশি রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নান্দাইল উপজেলার প্রকৌশলী শাহবো রহমান সজিব বলেন, মূল সেতুর কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হলেই যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তবে কবে নাগাদ হবে সে ব্যাপারে কিছু জানায়নি।
ময়মনসিংহ জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, সেতুর দুপাশে অ্যাপ্রোচ সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের আবেদন করা হয়ছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।