লক্ষ্মীপুরে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই পুলিশ সদস্য আহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার(৯ই মার্চ) সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মহসিন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। এতে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদর রহমানকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম শিপন খলিফা, চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াজ হোসেন জয়, ছাত্রলীগ নেতা এম সজিব ও আরাফাত হোসেন রিফাত।
অভিযুক্ত অন্যরা হলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিটন, ইউপি সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ সোলাইমান, ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক রিংকুসহ ৯ জন। এ ছাড়া অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সবাই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৮ মার্চ) চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে নেতাকর্মীরা রাতে আনন্দ মিছিল বের করে। এ সময় চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিলে বাধা দেয়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় তাদেরকে সতর্ক করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাদের ছোঁড়া ইট-পাটকেলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক জাকির হোসেন ও চন্দ্রগঞ্জ থানার কনস্টেবল মোজাম্মেল হোসেন আহত হয়। তাদেরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেন, আমি মারামারি ঘটনায় ছিলাম না। পারিবারিক কাজে ব্যস্ত ছিলাম। কি জন্য আমাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে বুঝতে পারছি না।
চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদুর রহমান বলেন, আমার ভাই আকবর হোসেনকে মারধর করার ঘটনায় আমি প্রতিবাদ করি। এতে আমাদের ওপর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের লোকজন হামলা চালায়। এনিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আমরা পুলিশের ওপর হামলা করিনি।
চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়েছি। আমাদের আনন্দ মিছিলে চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে হামলা করা হয়। এতে আমাদের আটজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ আমাদের চারজনকে আটক করে নিয়ে গেছে। কিন্তু মূল হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করেনি।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, মামলায় আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদেরকে লক্ষ্মীপুর আদালতে সৌপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।