মেট্রোরেল রাজধানীবাসীর কাছে একটি আবেগের নাম। অসহনীয় ও তীব্র ক্ষতির যানজটের অতিষ্ঠ ঢাকাবাসী। এই সময়টাতে অনেকটা স্বস্তি আনবে মেট্রোরেল। দীর্ঘসময় অপেক্ষার পর মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও প্রান্তের উদ্বোধন হবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে। এ ব্যাপারে তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমএমএন ছিদ্দীক।
এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, দেশের প্রথম মেট্রোরেল ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। প্রাথমিকভাবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল।
বলেন, প্রথম ধাপে ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট খুলে দেওয়া হবে। এ পথে ৯টি স্টেশন রয়েছে। ইতোমধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের নির্মাণসামগ্রী সরানো হয়েছে।
ডিসেম্বরে আমাদের বিজয়ের মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই এমআরটি লাইন ৬-এর উদ্বোধন করবেন। তবে এখনো নির্ধারিত তারিখ জানা যায় নি।
মানুষের ভোগান্তি দূর করতে, ঢাকাকে যানজটমুক্ত করার জন্য বর্তমান সরকার ২০১২ সালে ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা মেট্রোরেলের পরিকল্পনা করে। পরীক্ষামূলক এই চলাচলের জন্য মোট ১৯টি ধাপ শেষ করতে হয়েছে। সেই ধাপগুলো ঠিকঠাক কাজ করছে কি না সেটি নিশ্চিত হওয়াই এই চলাচলের উদ্দেশ্য।
প্রায় দুই কোটি জনসংখ্যার রাজধানীতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর বড় বাধা নিকৃষ্ট গণপরিবহন এবং অসহনীয় যানজট।জনসংখ্যা বিস্ফোরণের মাত্রাতিরিক্ত চাপ, ঢাকায় কেন্দ্রীভূত অদক্ষ প্রশাসন, কেন্দ্রীভূত সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান যানজটের জন্য দায়ী।
জন্মস্থানে বেড়ে ওঠা, শিক্ষা নেওয়া, কর্ম করার, শ্রম বিনিয়োগ করার, উৎপাদন ও ভোগ করার, সেবা পাওয়ার ও বিনোদন করার সুযোগ জেলাভিত্তিক হয়নি। মানুষ ক্রমশ রাজধানীমুখী হচ্ছে। রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, তদবির-নিয়োগ-বদলি-পদায়ন, চাকরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সব কাজই ঢাকাকেন্দ্রিক।
তাই ক্রমশ সমস্যা বেড়েই চলছে।একইসাথে যানজট সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনাগুলোর ধীর গতির বাস্তবায়নও সমস্যার তীব্রতা বাড়াচ্ছে। তীব্রতর এই সব সমস্যায় ঠিক তখন স্বস্তি আনতে মেট্রোরেলের বাস্তবায়ন হচ্ছে।
ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে ট্রেন। তাই সময় আর গতির মেলবন্ধন ঠিক করার পরীক্ষাও চলছে। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে মেট্রোরেলের ইন্টিগ্রেশন টেস্ট। প্রথম ধাপে উত্তরা থেকে আগারগাঁওয়ের পথে চলবে ১০ সেট ট্রেন। প্রতি সেট ট্রেনে থাকছে ছয় বগি। একেক বগিতে ৫৪ জনের বসার ব্যবস্থা। দাঁড়িয়ে ভ্রমণের জন্য আছে পর্যাপ্ত জায়গা।