কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, শেখ হাসিনার হাতে পুলিশ, র্যাব, ডিসি, এসপি ও প্রশাসন রয়েছে। সারাদিন কা কা করা ওবায়দুল কাদেরও আছে। কিন্তু তার কাছে জনগণ নেই। জনগণ আছে বিএনপির সাথে, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সাথে। শুক্রবার (২৬ মে) লক্ষ্মীপুর শহরের পুরাতন গো-হাটা সড়কের বশির ভিলা প্রাঙ্গণে জেলা বিএনপির আয়োজিত জনসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ্যানি বলেন, ২০১২-১৩ সালে আমরা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি। অনেকেই লক্ষ্মীপুর থেকে রায়পুর হয়ে চাঁদপুরে স্টিমার ধরেছেন। অনেকেই দেশ ছেড়েছেন। অনেকে দেশ ছাড়ার জন্য ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। আমেরিকা, লন্ডন, কানাডা, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশের ভিসা নিয়েছেন। এখন আবার সেই সময় এসেছে। আমেরিকার ভিসা নিলেও কোন লাভ হবে না।
বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে প্রচুর গায়েবী মামলা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীরা খুন হয়েছে-গুম হয়েছে। ডিসি-এসপি-র্যাব সাহেবদের বলছি, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলছি, এক হলে গণতন্ত্র-প্রজান্ত্রের হিসেবে কাজ করুন, না হলে এর পরিণতি শুভ হবে না। জনগণ চাইলে অনেক কিছু করতে পারে। এখনই মোক্ষম সময়। কারণ বার্তা এসে গেছে। বার্তা মোতাবেক ওয়ার্ডে, পাহা-মহল্লা, উপজেলা, জেলায়, বিভাগে ও কেন্দ্রে আমাদেরকে জমজমাট অবস্থান তৈরি করতে হবে। রাজপথে থেকে অধিকার আদায় করতে হবে। মনে রাখবেন, এ অধিকার আমার-আপনার প্রয়োজনে। এ অধিকার ১০ দফার ভিত্তিতে। এ দেশে ভোটের অধিকার, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতেই আন্দোলনে নেমেছি। রাজপথে থেকেই তা বাস্তবায়ন করতে হবে।ফ্যাসিবাদি, কর্তৃত্ববাদী, হায়েনা সরকারের বিরুদ্ধে ১৪-১৫ বছর ধরে চালিয়ে যাওয়া আন্দোলন আরও বেগবান করতে হবে। অধিকার আদায়ের জন্য লক্ষ্মীপুরসহ সারাদেশই প্রস্তুত রয়েছে।
তারেক রহমানের রাজনীতিকে আওয়ামী লীগ ভয় পায় জানিয়ে এ্যানি বলেন, তারেক রহমানের কথা একজনের শুনলে তার পাল্টিমেশন বেড়ে যায়। তিনি তারেক রহমানের কথা শুনতে পারেন না। কারণ এ তারেক রহমান দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনকে গাইড করে ফ্যাসিবাদি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হিম্মত সৃষ্টি করেছে। তারেক জিয়ার রাজনীতিকে আওয়ামী লীগ ভয় পায়। জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার রাজনীতিকেও তারা ভয় পেয়েছে। এজন্য তারেকের কথা শুনলে তাদের পাল্টিমেশন বেড়ে যায়। তারেককে মেনে নিতে পারে না। তারেকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়েছে। কিন্তু কোর্ট তা সমর্থন দেয়নি। তাকে ষড়যন্ত্রমূলক সাজা দিয়েছে। এ কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে আজ তারেক নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমরা আশাবাদি সহসাই এ দখলদার, কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন হবে।
হাজার হাজার নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত জনসমাবেশে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অধীন আদালত এবং সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদসহ ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল আহমেদ মজুমদার, হারুনুর রশিদ ভিপি হারুন, সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শাহাবুদ্দিন সাবু ও যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাছিবুর রহমান।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি