২০০৩ সালের ২৩ মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ৭ জুন। দিনের হিসেবে ৭ হাজার ৩৮১ দিন। অর্থাৎ ২০ বছর পর আইসিসির কোনো ইভেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি ভারত-অস্ট্রেলিয়া। ২০০৩ সালে সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দল দুটি। সেবার ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
২০ বছর পর নিরপেক্ষ ভেন্যু ওভালে আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আজ বিকেলে মুখোমুখি হবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া।
অবশ্য ২০ বছরে বদলেছে অনেক কিছু। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার নতুন একটি ক্রিকেট প্রজন্ম গড়ে উঠেছে। তারাও ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় উপনীত হয়েছে। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা রাহুল দ্রাবিড় এখন ভারতের প্রধান কোচ।
এই সময়ের মধ্যে ভারত একাধিকবার আইসিসির শিরোপা জিতেছে। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতে ৩৮ বছর পর। আর ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতে। অবশ্য এই সময়ের মধ্যে তারা তিনবার ফাইনালে হেরেছে আর চারবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া, ২০০৬ ও ২০০৯ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছে, ২০০৭ ও ২০১৫ সালে দুইবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছে এবং ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে
আরও একটি ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। শক্তিমত্তায় কেউ কারও চেয়ে কম নয়। লড়াই হবে শেয়ানে শেয়ানে। কিন্তু দিনশেষে একটি দলই জিতবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের রাজদণ্ড।
অবশ্য সম্প্রতি দুই দলের কেউ-ই খুব বেশি টেস্ট খেলেনি। শুধু তারা কেন, সীমিত ওভারের ক্রিকেটের রমরমা সময়ে অধিকাংশ টেস্ট স্ট্যাটাসধারী দলই টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিমুখ হচ্ছে এক প্রকার। সেখানে এমন একটি ফাইনাল নিঃসন্দেহে টেস্ট ক্রিকেটকে উজ্জীবিত করার প্রয়াস জোগাবে।
আরও একটি কারণে এই টেস্টটি স্মরণীয় করে রাখতে চাইবে উভয় দল। সেটা হলো- এই ফাইনালে খেলা অধিকাংশ খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারে এটাই হয়তো শেষ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। তাদের হয়তো আর দেখা নাও যেতে পারে সাদা পোশাকে।
অস্ট্রেলিয়ার উসমান খাজা, নাথান লায়ন, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল স্টার্ক ও ডেভিড ওয়ার্নার— তাদের প্রত্যেকের বয়স ৩৩ কিংবা তার বেশি। একইভাবে ভারতের রবীচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, বিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পূজারা, আজিঙ্কা রাহানে, রোহিত শর্মা, মোহাম্মদ শামি ও উমেশ যাদবের বয়সও প্রায় ৩৩। রোহিত ও কামিন্স ছাড়া তাদের প্রত্যেকেই ক্যারিয়ারে ৫০ এর অধিক টেস্ট খেলেছেন। আজ তারা দুজনও ৫০ টেস্ট খেলার মাইলফলক স্পর্শ করবেন।
সুতরাং দুটি দেশের দুটি সোনালী প্রজন্ম শেষবারের মতো আজ মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ফাইনালে। তাদের মধ্যে কারও স্বপ্ন পূরণ হবে শিরোপা জয়ের। কারও স্বপ্ন থেকে যাবে অধরা।