ইউরোপিয়ান ফুটবলের পাট চুকিয়ে লিওনেল মেসির মার্কিন মুলুকে পাড়ি দেওয়া নিশ্চিত হয়েছিল গত মাসের শুরুতেই। বাকি ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। শেষ পর্যন্ত সেই নিয়মরক্ষার পর্বও সম্পন্ন হলো।
আড়াই বছরের চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দিয়েছেন মেসি। চুক্তির মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত হলেও আর্জেন্টাইন মহাতারকার সামনে সেটি ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
শনিবার (১৫ জুলাই) মেসির সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার ব্যাপারটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানায় ইন্টার মিয়ামি। রবিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঘরের মাঠ ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামে সাতবারের ব্যালন ডি অর জয়ী ফুটবলারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের খেলোয়াড় হিসেবে উপস্থাপন করবে মার্কিন ক্লাবটি।
ইন্টার মিয়ামির সঙ্গে চুক্তি সম্পন্নের প্রতিক্রিয়ায় মেসি বলেন, “ইন্টার মায়ামিতে ক্যারিয়ারের পরবর্তী ধাপ শুরুর ব্যাপারে আমি বেশ উন্মুখ হয়ে আছি। এটি অসাধারণ একটি সুযোগ এবং আমরা একসঙ্গে দারুণ কিছু করব। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করা। আমি এখন আমার নতুন এই ঘরকে সাহায্য করার জন্য অপেক্ষা করছি।”
মেসির মতো তারকাকে নিজের মালিকানাধীন ক্লাবে পাওয়াকে স্বপ্নপূরণের অভিজ্ঞতা হিসেবে উল্লেখ করে ডেভিড বেকহাম বলেন, “১০ বছর আগে আমি যখন মায়ামিতে নতুন ক্লাব নির্মাণের যাত্রা শুরু করি, তখন থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল দারুণ এ শহরে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে আসার।”
সাবেক এ ইংলিশ ফুটবলার বলেন, “আজ সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। লিওর মতো সামর্থ্যের একজন ফুটবলারের এই ক্লাবে যোগ দিয়েছে- আমার জন্য এর চেয়ে গর্বের কিছু হয় না। তবে একজন ভালো বন্ধু, অসাধারণ ব্যক্তি এবং তার সুন্দর পরিবারকে ইন্টার মিয়ামিতে স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। আমাদের প্রথম ধাপের রোমাঞ্চের শুরু এখানেই। লিওর মাঠে নামা নিয়ে আমার আর তর সইছে না।”
এমএলএস কমিশনার ডন গার্বার এক বিবৃতিতে বলেন, “ইন্টার মায়ামি এবং মেজর লিগ সকারে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় আসায় আমরা আপ্লুত। আমাদের কোনো সন্দেহ নেই যে লিওনেল পৃথিবীকে দেখাবে যে এমএলএসকে চাইলে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়েরা নিজেদের গন্তব্য হিসেবে বেছে নিতে পারে।”
ডেভিড বেকহামের মালিকানাধীন ইন্টার মিয়ামির সহপ্রতিষ্ঠাতা জর্জ মাস জানান, ফ্লোরিডাভিত্তিক ক্লাবটিতে খেলার মাধ্যমে মেসি বছরে ৫০-৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবেন। সেই সঙ্গে পারিশ্রমিকের পাশাপাশি সাইনিং বোনাস তো আছেই। তবে ইন্টার মিয়ামিতে খেলা অবস্থায় মেসির আয় এখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।
এমএলএসের লভ্যাংশের ভাগ পাওয়া নিয়ে এ প্রতিযোগিতার ব্যবসায়িক অংশীদার অ্যাপল, অ্যাডিডাস ও ফ্যানাটিকসের সঙ্গে মেসির এখনও আলোচনা চলছে। বিষয়টি চূড়ান্ত হলে উত্তর আমেরিকায় খেলার মাধ্যমে এখান থেকেও আয় করবেন মেসি। এমনকি অবসরের পর ৩৬ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড ক্লাবটির মালিকানার অংশীদার হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
আগামী ২১ জুলাই ক্রুজ আজুলের বিপক্ষে লিগস কাপে ঘরের মাঠ ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামে ইন্টার মিয়ামির জার্সিতে মেসির অভিষেক হবে। ২০ আগস্ট শারলটের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো এমএলএসে মাঠে নামবেন মেসি