দরজায় কড়া নাড়ছে জাতীয় নির্বাচন, আর নির্বাচনকে ঘিরে কেন্দ্রীয় ভাবে বিএনপির নানান কর্মসূচী ঘোষণা কিংবা বাস্তবায়ন হচ্ছে। তবে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় বিএনপির এমপি প্রার্থীতার কন্দোলের রেশ পড়েছে কর্মসূচিতে। দলীয় মনোনয়ন পেতে একে অন্যের মাঝে চলছে বিভাজন। এতে অনেক ত্যাগী কর্মীরা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি কোন গ্রুপের সাথে আছেন।
জানা যায়- কেন্দ্রীয়, বিভাগ, জেলা কিংবা উপজেলার কোন কর্মসূচীতে এক ব্যানারে দেখা যায় না উপজেলা বিএনপির সকল নেতাকর্মীকে। ব্যানারে উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি লেখা থাকলেও যার যার সমর্থক নিয়ে পালন করে কর্মসূচী। দলীয় ব্যানার হলেও সমর্থিত ছাড়া দেখা যায় না সিনিয়র নেতাকর্মীদের কেও।
এদিকে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মিরসরাই উপজেলা থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও সবেক উপজেলা সভাপতি মো. নুরুল আমিন, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, উপজেলা আহবায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরীসহ অনেকেই। তাই উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এতে এক ব্যানারে আন্দোলন কর্মসূচী প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, প্রার্থীতার এই কন্দোলের কারণে ব্যানারে দলীয় নাম দেয়া হলেও এক হয়ে কোন কর্মসূচীতে যোগ দেয়না সকল নেতাকর্মীরা।
সাম্প্রতিককালে দেখা যায়- গত সোমবার বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির নাম উল্লেখিত ব্যানারে কুমিল্লা, ফেনী, মিরসরাই ও চট্টগ্রাম-এ তারুণ্যের রোড মার্চ সফল করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। অনুষ্ঠানটি পৌর বিএনপির আয়োজনে হলেও দেখা যায়নি পৌর বিএনপির সদস্য সচিব সাবেক কমিশনার নিজাম উদ্দিনকে।
অপরদিকে দেখা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) বিএনপি ও অঙ্গ, সহযোগী সংগঠনের নামের ব্যনারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন- উত্তর জেলা যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা সভাপতি মো. নুরুল আমিন। এতে দেখা মিলেনি সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী নিজাম কিংবা বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির আহবায়ক দিদারুল আলম মিয়াজীকে।
এদিকে দলীয় সিনিয়র ও দায়িত্বশীল নেতাদের এমন বিভক্তিতে বেকায়দায় পড়েছেন সাধারণ কর্মীরা। অনেক প্রোগ্রামে সাধারণ কর্মী জানেই না তিনি কার সাথে আছেন বা কোন গ্রুপে আছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়নের একাধিক বিএনপি কর্মী জানান, যখন থেকে রাজনীতি বুঝতে শুরু করেছি তখন থেকেই বিএনপিকে মনে প্রাণে ভালোবাসি। কিন্তু বর্তমানে মিরসরাইতে বিএনপি বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যাওয়াতে প্রোগ্রামে গেলে বুঝে উঠতে কষ্ট হয় কোন গ্রুপের প্রোগ্রামে এসেছি। তবে অন্য সিনিয়র নেতারা নেই কেন? মনে এমন কৌতূহল জাগে!
এ বিষয়ে বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির সদস্য সচিব কমিশনার নিজাম উদ্দিন জানান, চেয়ারম্যান সাহেব এর একান্ত প্রোগ্রাম হলে অনেক সময় আমাদের জানানো হয় না। আবার দেখা যায় গ্রুপিং এর কারণে প্রোগ্রাম গুলোতে যাওয়া হয় না।
বারইয়ারহাট পৌর আহবায়ক দিদারুল আলম মিয়াজী জানান, বারইয়ারহাট পৌরসভার যেকোন প্রোগ্রামে সবাইকে জানানো হয়। দেখা যায় জানালেও অনেকে আসে না। তাই না আসাতে আসতে এখন আর জানানোও হয় না।
উপজেলা বিএনপি আহবায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, রাজনৈতিক মতাদর্শে আমরা এক। আমরা একসাথে দলীয় ইন্টারনাল অনেক প্রোগ্রাম করি। তবে বর্তমানে অনেকেই দলীয় মনোনয়ন চাচ্ছে। যার কারণে সবাই যার যার কর্মকান্ড শো করতে চায়। সেক্ষেত্রে সবাই যার যার মত করে প্রোগ্রাম করে, তবে দলীয় কাঠামোকে আমরা এক। তবে কিছুটা অসংগতি থাকাটা স্বাভাবিক!
তবে এবিষয়টি নিয়ে দায় সারা উত্তর দিলেন উত্তর জেলা যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। তিনি বলেন, কোথায় কে দাওয়াত পাইছে-পাইনাই সেটাতো আমার জানা নেই। সম্ভবত সবাইকে জানানো হয়, কিন্তু তারা না আসতে চাইলে তো কিছু করার নাই।