বরিশালের বাবুগঞ্জে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শুধুই হলুদের সমারোহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। সরিষা ফুলের হলুদ রঙের বর্ণিল আভায় ছেয়ে গেছে গোটা ফসলের মাঠ। বাবুগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের মাঠে সরিষা ফুলের হলুদ রঙের সমারোহ লক্ষ করা গেছে।
চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় সরিষার আবাদ লক্ষনীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবং যথাসময়ে সরিষা ঘরে তুলতে পারলে ভালো দাম পাবে কৃষক বলে মনে করছেন বাবুগঞ্জ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, সরকারের নেয়া বিশেষ উদ্যোগ তেল জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধিতে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিদিন মাঠে কৃষকদের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। ফলে বাবুগঞ্জে সরিষা আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
উপজেলায় ৬ টি ইউনিয়নে বারি সরিষা -১৪, বারি সরিষা-১৭, বারি সরিষা-১৫ ও বিনা-৯ জাতের সরিষা আবাদে সফলতা পেয়েছে কৃষক। চলতি মৌসুমে উপজেলায় এ বছর ২৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল। আবাদ হয়েছে ৩৯০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা বেশি আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে হেক্টর প্রতি ১-১.৫টন সরিষা উৎপাদন হবে। সে হিসাবে ৫০০-৬০০টন সরিষা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর চাষাবাদের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছিল ২৯০ হেক্টর। আবাদ করা হয়েছিল ৩০০ হেক্টর। আর সরিষা উৎপাদন হয়েছিল ৩৮১মেট্রিক টন। এবার সরিষা চাষে বিগত দিনের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের রাকুদিয়া ও কেদারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ভূতেরদিয়া(বোয়ালিয়া) চাঁদপাশা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে সরিষা খেত। দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিশাল এক হলুদের চাদরে ঢেকে আছে ফসলের মাঠ। রাকুদিয়া গ্রামের সরিষা চাষি রাহাত সরদার বলেন, আমি ১ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। গত বারের চেয়ে এবার ফলন ভালো হয়েছে। আশা করি সারা বছর পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রিও করতে পারবো। সরিষা চাষে তুলনামূলক কম খরচে লাভ বেশি। সকলের সরিষা চাষ করা উচিত। চাঁদপাশা ইউনিয়নের সরিষা চাষি আরিফুর রহমান বলেন, সরিষা চাষে শ্রম ও খরচ দুই-ই কম। তাই সরিষা চাষ করেছি।
বাবুগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মামুনুর রহমান বলেন, সরকারের নেওয়া বিশেষ উদ্যোগ তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। বাবুগঞ্জে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ বেশি হয়েছে। আমরা সরকারিভাবে কৃষকদের প্রণোদনা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশাবাদী এবছর সরিষা উৎপাদন ভালো হবে।