‘আগামী ৭ জানুয়ারি একটি ভোট ভোট খেলার আয়োজন করছে সরকার। এই ৭ তারিখে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় যুক্ত হবে।’
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের ভোট বর্জনের পক্ষে গণসংযোগ কর্মসূচি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন জোটটির নেতারা।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও ভাষানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজুর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।
সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রস্তুতি হিসেবে সরকার দেশব্যাপী বিভিন্ন বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রেখে ৭ তারিখে একটি ভোট ভোট খেলার আয়োজন করছে। সরকার ১৪ ও ১৮-তে যেভাবে একটা কলঙ্ক তৈরি করেছে, সে অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কের দিন হিসেবে চিহ্নিত হতে যাচ্ছে। এতে ইতিহাসে আরেকটি কালো অধ্যায় যুক্ত হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ পরিষ্কার করে বলেছে- আগামী বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি, ৭ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে একটা ভয়াবহ এবং অচল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো লিখেছে- আগামী ৭ তারিখে নির্বাচন নির্বাচন খেলার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একদলীয় শাসন পাকাপোক্ত হতে যাচ্ছে।’
গতকাল (বৃহস্পতিবার) নারায়ণগঞ্জে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তবের কথা উল্লেখ করে সাইফুল হক বলেন, ‘গত দুটো জাতীয় নির্বাচনে কোটি কোটি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে তারা (সরকার) দেশে নতুন যে জমিদারি ব্যবস্থা কায়েম করেছে এর কি কোনো ক্ষমা আছে? লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে আত্মসাৎ করে সম্ভাবনাময় দেশকে তারা (সরকার) গরিব দেশে পরিণত করেছে, এর কি কোনো ক্ষমা আছে? যদি আপনি (শেখ হাসিনা) আপনার শাসনের পাপ কমাতে চান তাহলে আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যাবেলা অথবা আগামীকাল (শনিবার) সন্ধ্যার সময় আপনি (শেখ হাসিনা) টেলিভিশনে এসে ৭ তারিখের নির্বাচনকে স্থগিত করার ঘোষণা দেন। হয়তো এর মাধ্যমে আপনার (শেখ হাসিনা) পাপ কিছুটা কমতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি সংসদ ভেঙে দিয়ে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচনকালীন সময়ে কিভাবে একটা অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার হতে পারে সেটির একটি কার্যকর বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করুন।’
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গদি টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ তাদের সব ধরনের চেহারা জনগণকে দেখাচ্ছে। এই গদি ঢেকে রাখার জন্য দেশ জাহান্নামে যাক তারপরও তারা গদি টিকিয়ে রাখবে। তাই বলতে চাই, এরা বাংলাদেশকে নিয়ে যেভাবে ছিনিমিনি খেলছে তা দেশের জনগণ কোনোভাবেই হতে দেবে না। জনগণ আওয়ামী লীগের ভোটকে বর্জন করার মাধ্যমে দেশে গণজাগরণের নতুন এক ধারার সূচনা করবে। এর মাধ্যমে আগামী দিনের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলনে আছেন, তারা আগামীকাল (শনিবার) এবং পরশু (রোববার) হরতাল ডেকেছেন। আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ তার ধারাবাহিকতায় ৩১ দফার ভিত্তিতে একদফার আলোকে আগামীকাল (শনিবার) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করব, এবং কালকে (রোববার) আমরা আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করব।’