দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীনতম কলেজ নড়াইল সরকারী ভিক্টোরিয়া কলেজ। এছাড়াও নড়াইলে রয়েছে আব্দুল হাই সিটি কলেজ, টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে জেলার বিভিন্ন গ্রামসহ আশে পাশের জেলা থেকে শিক্ষার্থীরা ছুটে আসে। দুর থেকে আসা শিক্ষার্থীদের অনেককেই থাকতে হয় মেসে। এসব শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের।
ফলে তাদের চলতে হয় বাড়ি থেকে পাঠানো নির্দিষ্ট কিছু টাকা দিয়ে। কেউ কেউ চলেন টিউশনির অর্থে। যা দিয়ে এমনিতেই পড়াশোনা, মেস ভাড়া, খাবার বিলসহ অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে হিমশিত খেতে হয় তাদের। তারপর আবার রমজানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আরও বেশি দিশেহারা হয়ে পড়েছে তারা।
সারাদিন রোজা থেকেও মেসে ইফতারির আয়োজন করতে পারছেন না। সেহেরিতে একটু ভালো খেলে রাতে খাবারের মান কমিয়ে আনতে হচ্ছে। দিন দিন টাকা বেশি দিলেও খাবারের মান একই থাকছে। যার প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের শারিরীক ও মানসিক স্বাস্থ্যে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে নড়াইল বাধাঘাট এলাকার মৌসুমী মেসের আব্দুল বারী সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বাড়ি থেকে মাসিক যে টাকা দেয় তাতে মাস চলে না জিনিসের দাম বেশি হওয়ার কারণে। তাই ইফতারি কেনা সম্ভব হয় না। তাই মেসের পাশের মসজিদে ইফতার করি।
নড়াইল সরকারী ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আল-আমিন খুলনার কয়রা থেকে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে নড়াইলে এসেছেন। সে কলেজের পাশের সাত্তার মেসে থাকে । তিনি জানান আগে যে দাম ছিল রমজান মাসে তা অনেক বেশি বেড়েছে। যা কেনা আমাদের জন্য সম্ভব হচ্ছে না। সারাদিন রোজা থেকেও মেসে ইফতারির আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। পাশে যে মসজিদ আছে সেখানেই ইফতার করতে হচ্ছে। রোজা থাকার জন্য সেহেরিতে যে একটু ভালো খাব, ওই সময় ভালো খেতে গেলে আবার রাতের খাবারে ভালো খাওয়া হচ্ছে না। যা আমাদের শরীরে প্রভাব ফেলছে।
শিক্ষার্থীদের এমন দূরাবস্থা নিয়ে কথা হয় সমাজকর্মী ও কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ নড়াইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজী হাফিজুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, রমজানে যেসব পণ্যের ব্যবহার করি তার কোনটারই দেশে অভাব নেই। তারপরও ব্যবসায়ীরা দামের হেরফের করছে। প্রত্যেকবারই রমজান আসলে ব্যবসায়ীরা এমন করে। বাজার নিযন্ত্রণে সরকার চেষ্টা করছে, আমরাও মানুষকে বোঝাবার চেষ্টা করছি।